গ্রেফতার এক আসামির জবানবন্দি, ডিএনএ টেস্টের ফলাফল ও তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তদন্তে ধর্ষণের ঘটনায় এসআই খায়রুলের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামে মাদক মামলায় গ্রেফতার এক আসামির বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর শার্শা থানায় মামলা হয়। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত একজনকে আসামি করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- শার্শার লক্ষণপুর গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে আবদুল কাদের, আবদুল কাদেরের ছেলে আবদুল লতিফ, চটকাপোতা গ্রামের হামিজ উদ্দিনের ছেলে কামরুল। এ ঘটনায় স্থানীয় গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুলের নাম ভিকটিম বললেও মামলায় অজ্ঞাত দেখানো হয়। মামলা প্রথমে শার্শা থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে হস্তান্তর করা হয়।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দিন হুসাইনের আদালতে আসামি আবদুল লতিফ গৃহবধূ ধর্ষণের স্বীকারোক্তি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক শেখ মোনায়েম হোসেন জানান, তদন্তকালে মোবাইল কললিস্ট পর্যালোচনা, সন্দেহভাজন অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ ও অফিসিয়াল অন্যান্য নথি পর্যালোচনায় জানা গেছে, ঘটনার দিন উল্লিখিত ঘটনাস্থলে এসআই খায়রুল ছিলেন না। এছাড়া এসআই খায়রুল ও তার কথিত দু’জন সোর্সেরও ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষায় এসআই খায়রুলের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। গ্রেফতার আসামিদের একজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, বাদীর দায়েরকৃত অভিযোগে গ্রেফতারকৃত তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া গ্রেফতার তিন আসামির ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।
পিবিআই কর্মকর্তা শেখ মোনায়েম হোসেন জানান, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামি বাদীর পূর্ব পরিচিত এবং পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্রে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক হয়। ঘটনার আগেও তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয় মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা যায়। ডিএনএ পরীক্ষায় স্বীকারোক্তি দেওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
তিনি জানান, অন্য দু’জন আসামি তারাও বাদীর পূর্ব পরিচিত। উভয়ের সঙ্গেই বাদীর একাধিক বিষয় নিয়ে আগে থেকেই শত্রুতা ছিল। স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামি বাদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় বাদীর স্বামীকে মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য প্রলোভন দেয়। বাদী জেলখানায় তার স্বামীর সঙ্গে ঘটনার একদিন আগে দেখা করে।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী তদন্তে দেখা গেছে, ঘটনার দিন বাদী স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামিকে ফোন করেন এবং পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী উভয়ে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন। বাদী নিজ মোবাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ঘটনার দিন ফোন করেন। যা সিডিআর পর্যালোচনায় সত্যতা পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ইউজি/আরবি