ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

১১ দফা দাবিতে না’গঞ্জে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
১১ দফা দাবিতে না’গঞ্জে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি ১১ দফা দাবিতে না’গঞ্জে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি

নারায়ণগঞ্জ: নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদের খাদ্যভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ থেকে কার্যকর করাসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।

সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিআইডব্লিউটিসির ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চুন্নু মাস্টার, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নিজামউদ্দিন খান, দপ্তর সম্পাদক কবির হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও দশআনি মোহনপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেনসহ জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

বক্তব্যে সবুজ শিকদার বলেন, করোনার এ মহামারির সময়ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা জাহাজ পরিচালনা করে এসেছে। যেকোনো উৎসবে নৌযান শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে। অথচ খাদ্যভাতা একটি মীমাংসিত দাবি হলেও সেই দাবি মানা হচ্ছে না। শ্রমিক নামধারী কিছু দুষ্কৃতিকারীর সঙ্গে মালিকপক্ষ আঁতাত করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করছে। মালিকরা সব সেক্টরে সুবিধা পেলেও শ্রমিকরা কোনো সুবিধা পায় না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অবিলম্বে আমাদের ১১ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামী ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা থেকে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে নৌযান শ্রমিকরা একযোগে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবে।

নৌযান শ্রমিকদের ১১ দফা দাবিগুলো হলো  নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খাদ্যভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। নৌ আইন মেনে ডব্লিউটিসি সিরিয়াল অনুযায়ী চট্টগ্রাম সমুদ্রগামী সব লাইটারেজ জাহাজ চলাচল করতে হবে। মালিককে নিয়োগপত্র, সার্ভিসবুক দিতে হবে এবং কথায় কথায় কোনো শ্রমিকের চাকরিচ্যুত করা চলবে না ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়লে তার দায় মাস্টারদের দেওয়া যাবে না। জাহাজে সব শ্রমিককে যথাযথ সম্মান দেখাতে হবে। নৌযানে কাগজপত্র দেখার নামে নৌ প্রশাসনের সব হয়রানি জুলুম, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ইনল্যান্ড মাস্টার ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সব প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালীন নৌযান থেকে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক দিতে হবে। নৌযান শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য দাতব্য চিকিৎসালয় ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে হবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদের ১২ লাখ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকার থেকে কল্যাণ তহবিল অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টি সহজ করতে হবে। ভারতগামী নৌযান শ্রমিকদের লোকাল এজেন্টের মাধ্যমে ল্যান্ডিং পাস, সার্ভিস ভিসা ও জাহাজে ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকদের সুবিধামতো স্থানে দৈনন্দিন বাজারঘাট করার জন্য পারাপারের নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন পয়েন্টে নদীপথে ডাকাতি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী বন্ধ করতে হবে। নৌপথে ড্রেজিং ও পর্যাপ্ত বয়াবাতি স্থাপন করতে হবে। ৮ ঘণ্টার অধিক কাজের জন্য ওভারটাইম হিসেব করে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। ঈদের আগে ও ১ মে শ্রমিক দিবসে নৌযান শ্রমিকদের ছুটি দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
এমআরপি/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।