ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নগদ সহায়তার তালিকায় ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের মালিক ১৬৫০ জন!

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
নগদ সহায়তার তালিকায় ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের মালিক ১৬৫০ জন!

ঢাকা: করোনাকালে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তার আড়াই হাজার টাকার লোভ সামলাতে পারেননি সঞ্চয়পত্রের মালিক, সরকারি কর্মচারী থেকে পেনশনভোগীরাও। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারের যে তালিকা চেয়েছিল, সেই তালিকায় তারা নাম লিখিয়েছিলেন।

জানা গেছে, ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের মালিক ১ হাজার ৬৫০ জন ওই তালিকায় নাম লেখান। এছাড়া সরকারি কর্মচারী ৫ হাজার ৫ জন ও সরকারের পেনশনভোগী ১০ হাজার ৬০১ জনের নামও ওই তালিকায় পাওয়া গেছে।

এরকম স্বচ্ছল ও সুবিধাপ্রাপ্তদের নাম থাকায় ৫০ লাখের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৮০১ জনকে। এদের মধ্যে একাধিকবার থাকা নামের সংখ্যা ৩ লাখ ১৪ হাজার ৩৬৯টি। অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে সুবিধা প্রাপ্ত ১ লাখ ৭৯ হাজার ২০৯ জন। এনআইডি, স্মার্ট আইডি, মোবাইল নম্বর, জন্মসনদ ভুল ১ লাখ ৩ হাজার ২৬১ জন। এনআইডি, স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে সিমকার্ড নিবন্ধন না থাকায় ৬ লাখ ৯০ হাজার ৩৬৩ জন। মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের তথ্যে গড়মিল ৭৬ জন। হিজড়া, গৃহিনী, পথশিশু, প্রতিবন্ধি, ইমাম, চা শ্রমিক, চা দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে ও বেকার ১ লাখ ৯ হাজার ৮৮২ জন। একাধিক ব্যাংক হিসাব ও ভুল রাউটিং নম্বর ১৮ হাজার ২২৬ জন।
 
মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব সচল না এবং স্থগিত থাকার কারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে ১৭ হাজার ৯৫৬টি মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব ও ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) হিসাব বাতিল করা হয়েছে। নিষ্ক্রিয়, মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব এবং ইএফটি হিসাব বাতিল হওয়ায় বিতরণ করতে না পারায় ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়। তারপর মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের মাধ্যমে ২৫০০ টাকা দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তাতে মোট ৩৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৩টি পরিবারকে ৮৭৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৫ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।  
 
দেশে করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করতে পারে এমন আশঙ্কায় ৮ মার্চের পর থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় সরকার ৫০ লাখ পরিবারকে ২৫০০ টাকা করে দেওয়ার জন্য ১২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ছয়টি ক্যাটাগরিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এদের মধ্যে দিন মজুর, কৃষি শ্রমিক, শ্রমিক, গৃহকর্মী, পরিবহন শ্রমিক, ভ্যান চালক, নির্মাণ শ্রমিক, দোকান কর্মচারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।  

মাঠ প্রশাসনের সহায়তা আইসিটি বিভাগ সম্ভাব্য উপকারভোগীদের একটি তালিকা তৈরি করে এবং সেন্ট্রাল এইড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে তা যাচাই-বাছাই করে। পরবর্তীতে তিন ধাপে ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ১৫৪ হাজার মানুষের একটি অর্থবিভাগে পাঠায়।
 
অর্থ বিভাগ এই তালিকা নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), ডাক বিভাগের জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, পেনশনার ও সরকারি কর্মচারীদের পুনরায় তথ্য যাচাই বাছাই করে। এতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেলও সহায়তা করেছে।
 
সরকার মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানিগুলোকে তহবিল স্থানান্তরের জন্য শুণ্য দশমিক শুণ্য ৬ শতাংশ হিসাবে কমিশন বাবদ ৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।  
 
নগদ ১৭ লাখ, বিকাশ ১৫ লাখ, রকেট ১০ লাখ ও শিওর ক্যাশ ৮ লাখ হিসাবে তহবিল স্থানান্তরের দায়িত্ব পেয়েছিল।
 
এর মধ্যে নগদ ১২ লাখ ৯০ হাজার উপকার ভোগীর হিসাবে ৩২৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, বিকাশ ৯ লাখ ৩০ হাজার হিসাবে ২৩৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, রকেট ৭ লাখ ৫ হাজার হিসাবে ১৭৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং শিওর ক্যাশ ৪ লাখ ৮০ হাজার হিসাবে ১২০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা স্থানান্তর করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
এসই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।