ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শহরজুড়ে টমটম, সকাল-সন্ধ্যা দুর্ভোগ

বদরুল আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২০
শহরজুড়ে টমটম, সকাল-সন্ধ্যা দুর্ভোগ শহরের ব্যস্ততম এলাকায় টমটমের সারি

হবিগঞ্জ: সরু রাস্তা, তার ওপর সারি সারি টমটম (ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক)। যেখানে সেখানে পার্কিংয়ের কারণে পয়েন্টগুলোতে দিনভর লেগে থাকে যানজট।

হবিগঞ্জ জেলা শহরে দেড় কিলোমিটার প্রধান সড়কের আধিপত্যে এখন টমটম। অপরিকল্পিত এই টমটম চলাচল হয়ে উঠেছে শহরবাসীর ‘গলার কাটা’।

স্থানীয়রা জানান, প্রধান সড়কসহ শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তাই এখন টমটমের দখলে। এপাশ-ওপাশ দু’পাশেই টমটম। রাস্তার কোথাও কোথাও চলাচল করছে তিন সারি বেঁধে। এতে লেগে থাকে যানজট, দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা।

জানা যায়, হবিগঞ্জ শহরে মোট ১৩০০ টমটম চলাচলের অনুমোদন দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। অথচ সেখানে চলাচল করছে চার হাজারেরও অধিক। তবে এমনিতেই নয়, অনুমতিবিহীন টমটমগুলো পৌরসভা এবং ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে চলাচল করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টাউন হল রোড থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে শতশত টমটমের সারি। যেন একটি টমটমের রেলগাড়ি। দুই সারিতে টমটম থেমে থাকায় অন্য কোনো যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে পারছে না। হেঁটে চলাও বন্ধের উপক্রম প্রায়। এছাড়াও হবিগঞ্জ শহরের কালীবাড়ি রোড, তিনকোনা পুকুর পাড়, সবুজবাগ, এমএ মোতালিব চত্তর, পুরাতন হাসপাতাল, খোয়াই ব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় যানজট লেগেই থাকে।

জেলা শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা চৌধুরী বাজার চৌরাস্তা। এখানে সকাল-সন্ধ্যা যানজট লেগেই থাকে। যেখানে ১৫ মিনিটে হাঁটা যায় পুরো শহর, সেখানে টমটমে যেতেই সময় লেগে যাচ্ছে আধাঘণ্টারও বেশি। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত টমটম চলাচল বন্ধ করা এখন শহরবাসীর প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে।

রাজনগর এলাকার রিপন আহমেদ বাংলানিউজকে জানানা, রাস্তায় বের হলে শুধু টমটমই চোখে পড়ে। এই টমটমের কারণে ঠিকভাবে হাঁটাও যায় না, রিকশাতেও চড়া যায় না। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পৌর কর্তৃপক্ষের এতগুলো টমটম চলাচলের অনুমতি দেওয়া ঠিক হয়নি।

টাউন হল রোড এলাকার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, টমটম শহরের যেকোনো প্রান্তে যেতে লাগে ৫ টাকা। এতে একটু সুবিধা থাকলেও যাত্রীদের তুলনায় প্রয়োজন অতিরিক্ত বেশি। প্রায় প্রতিটি টমটমেই দেখা যায় যাত্রী নেই। অথচ তারা রাস্তায় চলাচল করছে। এতে রাস্তায় দিনভর যানজট লেগে থাকে। সামান্য জায়গা যেতেও অনেক বেশি সময় লাগে। টমটমের কারণে হেঁটে চলাচলও কষ্টসাধ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আট হাজার টাকায় একটি টমটম চলাচলের প্লেট দেওয়া হয়। ফি বাবদ কিছু টাকা পাওয়ার আশাই পৌর কর্তৃপক্ষ জনগণের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উচ্চ আদালতের নির্দেশে সারাদেশে চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। নিত্য দুর্ভোগ কমাতে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে হবিগঞ্জ শহরে টমটম চলাচল শুরু হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ এক হাজার ২০০ টমটম চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল। তবে চলাচল করছে চার হাজারেরও বেশি। এরই মধ্যে ইদানিং দেওয়া হয়েছে আরও ১০০ টমটম চলাচলের অনুমতি। এ নিয়ে শহরজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।