ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিখোঁজ ২ শিশুকে উদ্ধার করলো সিআইডি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২০
নিখোঁজ ২ শিশুকে উদ্ধার করলো সিআইডি মাহিয়া আক্তার পিংকি ও মো. বিপ্লব বেপারী

ঢাকা: বাবা-মায়ের সম্পর্কের অবনতির পর ফরিদপুরে খালার সঙ্গে বসবাস করতো শিশু মাহিয়া আক্তার পিংকি (১৩) ও মো. বিপ্লব বেপারী (১০)। গ্লাস ভাঙার জেরে বকা খেয়ে খালার বাড়ি থেকে দাদার বাড়িতে রওনা দেয় তারা।

কিন্তু পথ ভুলে রাজধানী ঢাকায় এসে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।

অনেক খোঁজাখজির পর তাদের না পেয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুদের খালা সালেহা বেগম। অবশেষে ২০ সেকেন্ডের মাত্র একটি ফোনকলের সূত্র ধরে ঢাকার ভাটারা এলাকা থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, অচেনা জায়গায় এসে রাজধানীর এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় ঘুরতে থাকে এ দুই শিশু। পরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি দলের ৪৮ ঘণ্টা টানা অভিযানের পর সম্ভাব্য পাচার হওয়ার আগে তাদের উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল্লাহ হেল বাকী।
.তিনি বলেন, এ দুই শিশুর মা গত এক বছর পাঁচ মাস ধরে জর্ডানে কাজ করছেন। বাবা-মার মধ্যে খারাপ সম্পর্ক থাকায় তারা খালার বাড়িতে থাকতো। কিন্তু গ্লাস ভাঙা নিয়ে খালা বকা দেওয়ায় তারা দুই ভাই বোন খালার বাসা থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা যাওয়ার কথা বলে বের হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দাদার বাড়িতে যাওয়ার। কিন্তু পথ হারিয়ে তারা ঢাকা চলে আসে। পরে সম্ভাব্য পাচার হওয়ার আগে রাজধানীর ভাটারা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

সিআইডির সিনিয়র এএসপি আমিনুল হক বলেন, থানা পুলিশের কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হয়ে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। শিশু দু’টি রাজধানীর কোনো এক মোবাইল ফোনের দোকান থেকে তাদের বাবাকে ফোন দিয়ে শুধু বলে আব্বু আব্বু। কলটির সময় ছিল মাত্র ২০ সেকেন্ড। পরে সেই কলের সূত্র ধরে আমরা শিশু দু’টিকে খুঁজতে থাকি।

পরে একদিন এ দুই শিশু গুলশান মোড়ে বসে কান্না করছিল, সেই সময় এক রিকশাচালক তাদের তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে রিকশাচালক শিশুদের কাছ থেকে তার বাবার নম্বর নিয়ে ফোন দিয়ে ‘আপনার বাড়ি কী ফরিদপুর’, বলেই ফোন রেখে দেয়। এরপর থেকে ওই রিকশাচালকের ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

ফোনকলের সূত্র ধরেই আমরা তদন্ত শুরু করি। পরে টানা ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে রিকশাচালকের ফোন কল ট্র্যাকিং করে রাজধানীর ভাটারা থেকে এ দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা ওই রিকশাচালক প্রথমে মানবিক কারণে শিশু দু’টিকে তার বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরে তার মনে হয়তো তাদের পাচার করার চিন্তা আসে সেজন্য নিজের ফোন বন্ধ করে ফেলেন। আর সম্ভাব্য পাচারের আগেই আমরা তাদের উদ্ধার করি।

তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি। তদন্ত চলছে, পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২০
পিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।