ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

স্ট্রিট সোলারের আলোয় আলোকিত মানিকগঞ্জের গ্রামীণ মেঠোপথ

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২০
স্ট্রিট সোলারের আলোয় আলোকিত মানিকগঞ্জের গ্রামীণ মেঠোপথ স্ট্রিট সোলারের আলোয় আলোকিত মানিকগঞ্জের গ্রামীণ মেঠোপথ, ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: দিনের আলো নিভে যাওয়ার পর যখন সন্ধ্যা নামে, তখন ভুতুরে হয়ে ওঠে গ্রামাঞ্চল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ গ্রামীণ রাস্তায় বের হয় না।

আগে রাতে মানেই গ্রামের মেঠোপথ থাকত গা ছমছমে অন্ধকারাচ্ছন্ন। তবে এখন গ্রামের সেই আগের চিত্র পাল্টাতে শুরু করেছে।  

গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষাণাবেক্ষণের আওতায় এখন সন্ধ্যার পর বিজলি বাতির আলোয় আলোকিত হচ্ছে গ্রামীণ জনপদ। সন্ধ্যা নামলেই সৌর বিদ্যুতের সোলার হোম ও স্ট্রিট ল্যাম্পের আলোয় আলোকিত হয় গ্রামের মেঠোপথ।  

মানিকগঞ্জের শহর ও প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের মেঠোপথ, রাস্তার মোড়, ছোট বড় বাজারগুলোতে এখন সৌর বিদ্যুতের সোলার ল্যাম্প লাইট বসানো হয়েছে। এ আলোর কারণে গ্রামীণ জনপদে এসেছে নিরাপত্তা। অন্য দিকে, সোলার ল্যাম্প লাইট সরকারের ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষ্যকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। জেলায় প্রতি অর্থ বছরে এ সোলার ল্যাম্প লাইট বসানোর জন্য আলাদা বাজেট রাখায় দ্রুত গতিতে বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ অবকাঠামো, রাতে বোঝার কোনো উপায় নেই, কোনটি শহর আর কোনটি গ্রাম। সরকারের ইতিবাচক এ উদ্যোগ তাই সবার কাছেই প্রশংসনীয় হয়েছে।  

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ৪৬৭টি সোলার হোম এবং ৫৭৮টি স্ট্রিট সোলার বাবদ প্রথম পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া হয় নগদ দুই কোটি ২৯ লাখ ৯৯ হাজার ১৩১ টাকা। টিআর কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭৯৫টি সোলার হোম এবং ২০০টি স্ট্রিট সোলারের জন্য দেওয়া হয় দুই কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৪২১ টাকা। আর কাবিখা ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুই কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার ৬২০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩৫১টি সোলার হোম এবং ২৭৮টি স্ট্রিট হোমের জন্য । সবশেষে কাবিখা ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় ৪১১ সোলার হোম এবং ২৭৯টি স্ট্রিট সোলারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় দুই কোটি ৪২ লাখ ৩৮১ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহর নয় প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদের মোড়ে মোড়ে এখন সোলার ল্যাম্প লাইট দাঁড়িয়ে আছে। যা সারা দিন সূর্যের আলোকে সঞ্চয় করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত আলোকিত করে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ গ্রামীণ জনপদ। আর এতে মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন। কমেছে ছিনতাই।  

হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজার এলাকার লক্ষ্মণ কুমার বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে গত কয়েক বছর আগে বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সোলার প্যানেলের স্ট্রিট লাইট লাগানো হয়েছে। সন্ধ্যা হলেই এসব লাইট আলো দিতে শুরু করে। ফলে রাতেও নিরাপদে চলাচল করা যাচ্ছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে এ আলোর ব্যবস্থা থাকায় রাতে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশেই কমে গেছে।  

মানিকগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হলো- ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা। আর এ কারণে ২০১৬ সালের দিকে সোলার হোম এবং স্ট্রিট সোলার লাইটের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। তার পর থেকে সারা দেশে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষাণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্পের অধীনে কাজ শুরু হয়। আমাদের জেলায় প্রচুর কাজ হয়েছে, গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে চারটি প্রকল্পের আওতায় কয়েক কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এদিকে সোলার হোম গ্রামের মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব লাইট বসানো হয়েছে এবং স্ট্রিট লাইট গ্রামের মেঠোপথের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২০
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।