ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রায়হান হত্যার সুষ্ঠু বিচারে সরকার একপায়ে দাঁড়িয়ে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
রায়হান হত্যার সুষ্ঠু বিচারে সরকার একপায়ে দাঁড়িয়ে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হান উদ্দিন হত্যার সুষ্ঠু বিচারে সরকার একপায়ে দাঁড়িয়ে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, এ নিয়ে কারো সন্দেহ করার অবকাশ নেই।

কেননা হত্যা মামলার কার্যক্রমে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। আর উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবরকে কেউ পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে। জড়িত কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে পুলিশের তিন সদস্য এ ঘটনার সত্যতা জানিয়ে আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। এসআই আকবর যেখানেই থাকুক না কেন তাকে খুঁজে বের করা হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রায়হানের বিচারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপির সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও এক বাক্যে বলেছেন, কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। রায়হান হত্যার বিচার হবে। যখনই রায়হান হত্যার এজাহার নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তখনই পুলিশ মামলা ফাইল করেছে।

আব্দুল মোমেন বলেন, সিলেটের মাটিতে কেউ অপরাধ করে বাঁচতে পারেনি। আকবরও পারবে না। রায়হান হত্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এনেছি। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রায়হানের বাড়িতে যান এবং নিহতের মা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সান্তনা দেন।  

রোববার (১১ অক্টোবর) ভোরে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর রোববার থেকে আকবর পলাতক রয়েছেন।

মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআইতে স্থানান্তর হয়েছে। তদন্তভার পাওয়ার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহত রায়হানের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বপরি মরদেহ কবর থেকে উত্তেলন করে পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়।

রায়হানের হত্যার ঘটনায় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে জোরদার হচ্ছে আন্দোলন। প্রতিদিন সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ মানববন্ধন এবং রাস্তা অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

এদিকে সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের দেহে ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ফরেনসিক রিপোর্টে। এসব আঘাতের ৯৭টি লীলাফোলা আঘাত ও ১৪টি জখমের চিহ্ন ছিলো। এসব আঘাতগুলো লাঠি মাধ্যমেই করা হয়েছে। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষণে রায়হানের মৃত্যু হয়।

আঘাতে দেহের মাংস থেঁতলে যায়। রগ ফেটে গিয়ে আন্তঃদেহে রক্তক্ষরণ (ইন্টারনাল ব্লিডিং) হয়। আর অতিরিক্ত আঘাতের মুর্ছা যান রায়হান। আঘাত করার সময় রায়হানের পাকস্থলী (স্টমাক) খালি ছিল। স্টমাকে ছিলো কেবল লিকুইড এসিডিটি। রোববার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রিপোর্টটি পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
     
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।