ঢাকা, রবিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলানিউজের সংবাদে দোকান পেলেন চোখ হারানো নুর ইসলাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
বাংলানিউজের সংবাদে দোকান পেলেন চোখ হারানো নুর ইসলাম

খুলনা: দেশের শীর্ষ ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে সংবাদ প্রকাশের পর চায়ের দোকান করার আর্থিক সহায়তা পেলেন দুই চোখ হারানো নুর ইসলাম শেখ।

২০১৮ সালের ২৫ মার্চ বিকেলে খুলনার নিরালা প্রত্যাশা আবাসিক এলাকায় বেলুন বিক্রির সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুই চোখ হারান নুর ইসলাম।

এর পর থেকে ভিক্ষা করে কাটছিলো তার জীবন।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) ‘ব্যবসার জন্য মাত্র ৩০ হাজার টাকা চান দুই চোখ হারানো নুর ইসলাম’ এ শিরোনামে বাংলানিউজে একটি সংবাদ প্রচার হয়।

যে সংবাদে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চোখ হারানো নুর ইসলাম জানান, মাত্র ৩০ হাজার টাকা হলে ভিক্ষা ছেড়ে তিনি একটি চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। সংবাদটি দেখে সহৃদয়বান বেশ কয়েকজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাদের সহযোগিতায় ৪১ হাজার টাকা পান নুর ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বাংলানিউজের খুলনা ব্যুরো অফিসে এসে নুর ইসলাম ও তার স্ত্রী রিনা বেগমের কাছে চায়ের দোকান করার জন্য নগদ ৩০ হাজার টাকা তুলে দেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনার এক ব্যক্তি। এছাড়া বিকাশে সাতক্ষীরার এক ব্যক্তি ১০ হাজার টাকা ও পৃথক দুই ব্যক্তি ৫০০ টাকা করে এক হাজার টাকা পাঠান। তারা সবাই নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক।

নুর ইসলাম আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, দুই চোখ হারিয়ে অনেক অসহায় হয়ে পড়ি। আমার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ও আমি ভিক্ষা করে তিন মেয়ে নিয়ে কোনো রকম সংসার চলছিলো। আমার স্বপ্ন ছিল একটি চায়ের দোকান দেবো। যেখানে আমি বসবো আর স্ত্রী বেচাকেনা করবেন। কিন্তু টাকার অভাবে দোকান দিতে পারছিলাম না। আমার কষ্টের কথা বাংলানিউজে তুলে ধরার পর আমি দোকান করার জন্য টাকা পেলাম। যারা টাকা দিয়েছেন তাদের জন্য আমি আল্লাহর কাছে প্রাণ ভরে দোয়া করছি।

নুর ইসলামের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছিলো আমাদের। তিন মেয়ের ঠিক মতো লেখাপড়ার খরচ দিতে পারছিলাম না। আমার স্বামীর দুই চোখ হারানোর পর খুলনা শহরে থেকে মানুষের বাড়িতে কাজ করে, ভিক্ষা করে, চেয়ে চিন্তে স্বামীর চিকিৎসা, ওষুধ ও মেয়েদের লেখা পড়া চালিয়েছি। একপর্যায়ে খুলনা ছেড়ে বাবার বাড়ি মোড়েলগঞ্জের মোহনপুর গ্রামে গিয়ে একটু কুঁড়ে ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করি। সহযোগিতার এ টাকা দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে সেখানে রাস্তার পাশে একটি দোকান দেবো এবং অন্যান্য মালামাল কিনবো। আমার বড় মেয়ে সাথী সরকারি পিসি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে, মেজ মেয়ে সুমাইয়া এলাকার স্কুলে সপ্তম এবং ছোট মেয়ে আয়শা আক্তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। ওদের বাবা ভিক্ষা করে এতে ওরা ভীষণ লজ্জার মধ্যে পড়ে। এখন ওরা সেই লজ্জা থেকে মুক্তি পাবে।

তিনি জানান, সাতক্ষীরা থেকে বিকাশে যে লোক ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি তার জন্য একটি সেলাই মেশিন কুরিয়ারে পাঠাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।