ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

করোনায় আক্রান্ত গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা হাজার ছাড়ালো

সিনিয়র করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
করোনায় আক্রান্ত গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা হাজার ছাড়ালো

ঢাকা: করোনায় আক্রান্ত গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে আরো ১১ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।

তবে আক্রান্তদের মধ্যে ৯৪১ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন।

সোমবার (০৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ ‘আমাদের গণমাধ্যম-আমাদের অধিকার’ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, গত আট মাসে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত (কোভিড-১৯) হয়েছেন ১৯১ প্রতিষ্ঠানের ১০০৯ জন গণমাধ্যমকর্মী।  

গত ৩ এপ্রিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মী প্রথম করোনায় আক্রান্ত হলেও আট মাসে এ সংখ্যা বেড়ে ১০০৯ জনে অবস্থান করছে। এ পর্যন্ত ৯৪১ জন গণমাধ্যমকর্মী সুস্থ হয়ে ফিরলেও করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে এবং উপসর্গ নিয়ে আরো ১১ জন মারা গেছেন। এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা দীর্ঘ হওয়ায় গণমাধ্যমে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  

এদিকে, গত ৩ এপ্রিল প্রথম সংবাদকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এরপর থেকে তালিকা বড় হতে থাকে। ইতোমধ্যে ৯ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত ১৯১টি গণমাধ্যমের মধ্যে ১১৬টি সংবাদপত্র, ৩২টি টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ৩৬টি, রেডিও পাঁচটি এবং বার্তা সংস্থা দুইটির সংবাদকর্মীরা রয়েছেন।

অপরদিকে, এই সংখ্যক সংবাদকর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে একাধিক জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশন চ্যানেল লকডাউনও করা হয়। ১০০৯ জন সংবাদকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শে প্রায় চার শতাধিক সাংবাদিক-কর্মচারীকে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসায় সেলফ আইসোলেশনে পাঠায়।  

সংবাদকর্মীদের শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলেন, এই মুহূর্তে চিকিৎসক, পুলিশ, সাংবাদিক এবং জরুরি প্রয়োজনে কর্মরত সকলকেই শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সামনে শীত শুরু হচ্ছে এই সময় সবাইকেই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। শীতে করোনার প্রভাব বাড়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে। তাই আগে থেকেই সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনাকে নিয়ে আমাদের বসবাস করতে হবে। এজন্য নিউ নরমাল লাইফ বা নতুন করে বাঁচতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় ছিল। করোনার কারণে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। সংক্রমণের ঝুঁকি সবক্ষেত্রেই রয়েছে। তবে শারীরিক দূরত্ব যেখানে নেই, সেখানে ঝুঁকিটা বেশি। কোভিড-১৯-এর প্রধান চিকিৎসাই হচ্ছে সচেতনতা। অ্যাওয়ারনেস ছাড়া আপাতত এর কোনো ট্রিটমেন্ট নেই। তাই সবাইকে মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে তিনি জানান।

তারা আরো বলেন, যারা ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা তাদের জন্য নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ সময় যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের সার্বিক সহায়তা বিষয়টি সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের জটিলতার জায়গা গুলো ঠিক করতে হবে। সরকার সার্বিকভাবে সহায়তা করলে ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধাদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, দেশে একের পর এক সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনগুলো। এই সংখ্যা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য অশনিসংকেতও বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

এ ব্যাপারে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া উদ্বেগের বিষয়। সংবাদকর্মীরা  ফ্রন্টলাইনে কাজ করেন। এজন্য তাদের ঝুঁকিটা বেশি। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। ঝুঁকি এড়িয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা এখনও সপ্তাহের শনিবার এখানে সদস্যদের টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের সদস্য ও তাদের পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই এমনটি করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘন্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
এসএমএকে/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।