ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ছেলের মুক্তি চান মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সাবিহা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
ছেলের মুক্তি চান মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সাবিহা  সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: একমাত্র ছেলে মনিরুজ্জামান মনিরের নিঃশর্ত মুক্তি ও বাসায় হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের (মৃত) স্ত্রী সাবিহা খাতুন।

সোমবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

 

লিখিত অভিযোগে সাবিহা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। আমার শ্বশুর হাজি চিনু মিয়া (মৃত) মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর, নিউমার্কেট এলাকায় টানা ৩৭ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর আমার একমাত্র ছেলে মনিরুজ্জামান আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আমার ছেলে সর্বদা নিজেকে মানবসেবায় নিয়োজিত রাখে। ইতোমধ্যে সে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার রাস্তাঘাট মেরামতসহ ধর্ষণ, ছিনতাই, চুরি, মাদক ব্যবসা ইত্যাদি বন্ধ করতে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ঢাকা উদ্যানের সব সড়কে সিকিউরিটি বাড়াতে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে চুরি ও ছিনতাই অনেকটা কমে গেছে। লকডাউনের সময়ও সে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে গবিব-দুঃখীদের মধ্যেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করেছে। এছাড়া মানুষের বিপদে-আপদে সবসময় এগিয়ে যায়। তার এসব কর্মকাণ্ডের বাধা হয়ে দাঁড়ায় ফজলুল করিম বাদল, বরকত, আবু সায়েম শাহীন। তারা এলাকায় নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। তারা এলাকার প্লট মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে অবৈধ গ্যাস ও ওয়াসা সংযোগ দিত। সিসি ক্যামেরার কারণে তাদের এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ঢাকা উদ্যান সমিতি অফিস জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে সাবেক সেক্রেটারি ফজলুল করিম বাদল। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। শুধু তাই নয়, চুরি ও ছিনতাই কমে যাওয়ার কারণেও তারা অনেক ক্ষিপ্ত হয়। কারণ তারা চোর ও ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ভাগ পেত। এর ফলে ফজলুল করিম বাদল, বরকত, আবু সায়েম শাহীন ষড়যন্ত্র করে মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাজানো একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মনিরুজ্জামানকে কয়েকজন সাদা পোশাকধারী পুলিশ এসে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাকে মোহাম্মদপুর থানায় রাখা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে নেওয়া হবে বলে জানতে পেরেছি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা শুধুমাত্র আমার ছেলেকে গ্রেফতার করে ক্ষান্ত হয়নি। গত শনিবার (৭ নভেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা আমার বাসায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। রুমে ঢুকতে না পারায় আমি প্রাণে বেঁচে যাই। ওই সময় আমি ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। দুর্বৃত্তরা তখন বাসার গার্ড আলামিন রুকুকে বেধড়ক মারধর করে। আমার বাসার দরজা-জানালা ভেঙে তছনছ করে। এছাড়া পাশের একটি ছোট ঘরে আগুনও লাগিয়ে দেয়। অল্পের জন্য আমরা বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাই। হামলার বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।

সাবিহা খাতুন বলেন, এমতাবস্থায় আমরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছি। যেকোনো সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে। এজন্য সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পাশাপাশি আমার ছেলের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।  

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান, আব্দুল মান্নান, আবুল কাসেম, মো. আমিনুল ইসলাম মানিক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
এমএমআই/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।