ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ইফার কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
ইফার কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি  সংবাদ সম্মেলনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন দৈনিক ভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম । ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) ৩৫৯ জন কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন দৈনিক ভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি।

সোমবার (৯ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সরকারি অর্থে পরিচালিত একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এ প্রতিষ্ঠান শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বের একটি অনুকরণীয় অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এর পেছনে রয়েছে এখানকার শ্রমিক-কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম। ইসলামিক ফাউন্ডেশন আইন ১৯৭৫ এর ৩(২) ধারা মোতাবেক ফাউন্ডেশন একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। ওই আইনের ধারা ১০ (২) অনুযায়ী প্রয়োজনবোধে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জনবল নিয়োগের ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফাউন্ডেশনের কার্যবিধি বহুগুণে বেড়ে যাওয়ার ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সময়ে দৈনিক ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করে আসছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল দায়িত্বপালন কালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দাপ্তরিক প্রয়োজনে শূন্য পদের বিপরীতে বিভিন্ন সময় আওয়ামী পন্থি ৩৫৯ জন কর্মচারীকে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ১৩৫ জন কর্মচারীকে ২০১৭ সালে রাজস্ব করণ করা হয়। বাকি ২২৪ জন কর্মচারী দৈনিক ভিত্তিতে এখনও কর্মরত আছেন। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে জাতির পিতার প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে প্রতিবছর সরকারি অডিট হওয়া সত্ত্বেও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি অডিট করানো হয়। বিশেষ এ অডিট টিম ইফার বিভিন্ন অনিয়মে ৯৬টি আপত্তি উপস্থাপন করেছেন। অশুভ চক্র ৯৬টির মধ্যে শুধুমাত্র কর্মচারীদের ব্যাপারে দুইটি আপত্তি আমলে নিয়ে ৩৫৯ জন কর্মচারীর এক বছর ধরে বেতন ভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। অথচ একই অডিট টিম অফিসারদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদে ভুয়া সনদে চাকরি, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরি, মিথ্যা অভিজ্ঞতা সনদে চাকরি, বিভিন্ন জেলার অধিবাসী দেখিয়ে জেলা কোটায় সরকারি চাকরিসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের বৈষম্য কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।

বক্তারা আরও বলেন, যাদের এক বছর ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ করে রাখা হয়েছে তাদের এ চাকরিটি পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের এ দুঃখ দুর্দশার কথা জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৬ আগস্টে তার একান্ত সচিবের মাধ্যমে ডিজি মহোদয়কে টেলিফোনে ৫৬০টি মডেল মসজিদে নিয়োগ করে বেতন ভাতাদি দেওয়ার যে নির্দেশনা দিয়েছেন তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে ১০ থেকে ১১ বছর  দৈনিক ভিত্তিতে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চাকরি করার পরও আমাদের আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ গুলো নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করার পাঁয়তারা করছেন। অন্যদিকে ইফার রাজস্ব খাতের ৪৮৮টি শূন্য পদের মধ্যে ২২৪টি পদ আউটসোর্সিং করা হলেও পদগুলো সংস্থার স্থায়ী পদ হিসেবে আর থাকবে না। পাশাপাশি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী জামায়াত-বিএনপির সমর্থনকারী কর্মকর্তা তাদের কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে আবার জামায়াত-শিবিরের আড্ডাস্থলে পরিণত করবে। তাই আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা দক্ষতা সেবার কথা বিবেচনা করে এ মহামারিকালে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে আমাদের বকেয়া বেতন-ভাতা চালুকরণসহ শূন্য পদের বিপরীতে চাকরি জাতীয়করণের নির্দেশ দিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ না করলে আগামী রোববার (১৫ নভেম্বর) ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট পালন করা হবে বলেও জানান বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. মিলন সেখ, খাদিজা ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
এমএমআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।