ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তৃতার সুযোগ করে দিতেন বঙ্গবন্ধু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তৃতার সুযোগ করে দিতেন বঙ্গবন্ধু

ঢাকা: পার্লামেন্টে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তিনি বিব্রত হতেন না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ। প্রায় সময় বঙ্গবন্ধু স্পিকারকে বলে বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তৃতার সুযোগ করে দিতেন বলেও তিনি জানান।

সোমবার (০৯ নভেম্বর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে  ধরে বলেন, কনিষ্ঠ ও নবীন সদস্য হিসাবে গণপরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ ছিল আমার জন্য খুবই আগ্রহ ও আকর্ষণের। নিতান্ত নবীন সদস্য হিসাবে বয়ঃজ্যেষ্ঠও অভিজ্ঞ সদস্যদের কর্মকাণ্ড খুবই আগ্রহভরে প্রত্যক্ষ করতাম। পার্লামেন্টারিয়ান বঙ্গবন্ধু তখন ছিলেন আমার আগ্রহের একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে।

আব্দুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু সংসদের সকল কার্যক্রমে বিরোধী সদস্যদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। এক খসড়ার ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন,‘আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টিই একেবারে সবকিছু চূড়ান্ত করে নাই- দুই-একজন যারা নির্দলীয় বা বিরোধী পার্টি যাই বলুন আমার কোনো আপত্তি নাই, যদি আপনাদের ভালো কোনো সংশোধনী থাকে, তা নিশ্চয়ই দেশের মঙ্গলের জন্য মনকে আমরা বড় করে তা গ্রহণ করব। ’

তিনি বলেন, সংসদে আরও একটা বিষয় ছিল লক্ষ্যণীয়, পার্লামেন্টে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে স্পিকার বিব্রত হতেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু হতেন না। উদার না হলে, গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন না হলে এটা ভাবাই যেত না। ১৯৭৩ সালে পার্লামেন্টে আতাউর রহমান খান, এমএন লারমাসহ বিরোধী দলের কয়েকজন এমপি ছিলেন। তখনও দেখেছি তারা কথা বলতে চাইলেই সুযোগ পেতেন। প্রায় সময় বঙ্গবন্ধুই স্পিকারকে বলে সে সুযোগ করে দিতেন। বিরোধী দলের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আলাদা একটা মনোযোগ ছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। রাজনৈতিক মতাদর্শের যত অমিলই থাকুক না কেন বঙ্গবন্ধু কখনো বিরোধী দলের নেতাদের কটাক্ষ করে কিছু বলতেন না বরং তাদেরকে যথাযথ সম্মান দিয়ে কথা বলতেন। রাজনৈতিক শিষ্টাচার তার জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল।

রাষ্টপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু সংসদে হাস্যরস করতেও পিছপা হতেন না। একবার সংসদে বক্তব্য দানকালে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, “মাননীয় স্পিকার, আপনার মাধ্যমে অনুরোধ জানাচ্ছি যে, ভবিষ্যতে আমার এই মাইকটি একটু উঁচু করে দিবেন, আমি মানুষ একটু বেশি লম্বা”। হাউজ পরিচালনার ক্ষেত্রেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন খুবই আন্তরিক। কার্যপ্রণালী বিধি মেনে নিজেও আলোচনা করতেন এবং অন্য সদস্যরাও যাতে তা মেনে চলে সে ব্যাপারেও শক্ত হাতে হাউজ চালানোর ব্যাপারে স্পিকারকে অনুরোধ জানাতেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘন্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
এসেকে/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।