ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি: তোফায়েল আহমেদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি: তোফায়েল আহমেদ

ঢাকা: আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি। আমি ওইদিন রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধি ঘোষণা করেছি।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর মামলা প্রত্যাহার হলো, ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে ৩২ এর বাসভবনে পৌঁছে দেওয়া হলো। বেগম মতিয়া চৌধুরী, মনি সিংহ, বঙ্গবন্ধু একই দিনে মুক্তি লাভ করেছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম পল্টনে না, আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুকে গণসংবর্ধনা দেবো।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাভবন হয়ে বঙ্গবন্ধুকে ৩২ নম্বরের বাসায় পৌঁছে দিয়ে আমি পল্টনে গিয়ে ঘোষণা দিলাম আগামীকাল আমাদের সমাবেশ হবে হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী রেসকোর্স ময়দানে। ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিলাম কারা বক্তব্য দেবেন। অনেকের নাম এলো। আমি বললাম চার পার্টির চার নেতা বক্তব্য দেবেন।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১০ লক্ষাধিক লোকের ২০ লক্ষাধিক হাত। আমি বঙ্গবন্ধুর সামনে। এত জনসমাগমের মধ্যে আমি বঙ্গবন্ধুকে তুমি বলে বক্তব্য শুরু করলাম। প্রিয় নেতা অনেক রক্তের বিনিময়ে তুমি আমাদের মধ্যে ফিরে এসেছো। তোমার কাছে বাঙালি জাতি ঋণী। কারগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বসে তুমি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা হৃদয়ে অংকন করেছো প্রিয় নেতা। আমি অনেক লম্বা বক্তব্য দিয়ে বলেছিলাম ‘তোমার এ ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। ’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞ চিত্তে তোমাকে একটি উপাধি দিয়ে সেদিনের বোঝা হালকা করতে চাই। তখনই বলা হয়েছিল যে নেতা তার জীবন আর যৌবন কাঁটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। সেই মহান নেতাকে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞ চিত্তে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হলো।

তারপরেই প্রথম আমি মঞ্চে ঘোষণা করলাম, এবার জাতির সামনে বক্তব্য দেবেন আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ওই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে আমি গোলটেবিল বৈঠকে যাবো। ৬ দফা, ১১ দফা পেশ করবো। যদি না মানে আমি আবার ফিরে এসে সংগ্রাম করবো। গোলটেবিল বৈঠকে গেলেন মানলো না।

এসময় হামিদুল হক চৌধুরীর বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, গোলটেবিল বৈঠকে আইয়ুব খান বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন, আপনি প্রধানমন্ত্রীত্ব নেন। আপনিই প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আমি আসিনি। আমি এসেছি আমার বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু যখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বলেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। সেটা মানুষ বিশ্বাস করে। তিনি বহুদিন প্রধানমন্ত্রীত্ব চাননি।

প্রধানমন্ত্রীর বদলে তিনি ফাঁসির মঞ্চ বেছে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করলেন। আইয়ুবের পতন হলো। আইয়ুব খান ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন। তারপরে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এর মধ্যেই নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সাক্ষী বঙ্গবন্ধু লন্ডনে গেলো। অক্টোবর মাসে। নেত্রী ছিলেন ইতালি। তিনিও লন্ডনে ফিরে এলেন। সেখানে ভারতের প্রতিনিধি মনিন্দ্র নাথ ব্যানাজীর সঙ্গে বৈঠক করলেন। তিনি পরিকল্পনা করলেন। আমাদের এসে বললেন। ইন দ্য মিন টাইম ইয়াহিয়া খান ইলেকশন ঘোষণা করার পরে বললেন, তোমরা এখন অন্য কাজ করো।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
এসই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।