ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নদী সংক্রান্ত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে ভিন্নমত নিষ্পত্তিতে কমিটি হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
নদী সংক্রান্ত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে ভিন্নমত নিষ্পত্তিতে কমিটি হবে কথা বলছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নদী দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বাড়ানোর জন্য মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ভিন্নমত নিষ্পত্তি করার জন্য কয়েকটি কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

রোববার (১৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে এ সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, অনুমোদিত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবে যেসব অবৈধ দখল আছে ইতোমধ্যে আমাদের নৌ-মন্ত্রণালয় দখলমুক্ত করেছে। উচ্ছেদকৃত স্থানগুলো সংরক্ষণ এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণের জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা যেন দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেন। এরমধ্যে কোথায় কোথায় সমন্বয়হীনতা থাকে, সিটি করপোরেশন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় আছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যে কাজগুলো করবে সেগুলো সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে করতে হবে। মাস্টারপ্ল্যানে চাহিদা মোতাবেক সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ভিন্নমত নিষ্পত্তি করার জন্য কয়েকটি কমিটি করার কথা আলোচনা হয়েছে। আলোচনা করে আমরা কমিটি গঠন করে দেবো।

খাল উদ্ধারের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে যেসব খাল রয়েছে সেগুলো সংস্কার ও ওয়াকওয়ে তৈরি করে সম্ভাব্য যত সুযোগ আছে তা কাজে লাগানোর জন্য দুই-একটা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আরও কোথায় কোথায় প্রকল্প নেওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছি।

ধানমন্ডি লেক নিজে পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা কী করে সংষ্কার করে দৃষ্টিনন্দন করতে পারি সেজন্য বেশকিছু লোককে ইনফরমালি ইনগেজ করেছি। সে কাজটিও করছি।

বুড়িগঙ্গার নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য যমুনা নদীতে যে জায়গায় ড্রেজিং করা দরকার তা নিয়ে নৌ-সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি নিশ্চিত করেছেন কাজটি দ্রুত করছেন। কাজটি করলে সেখানে পানি প্রবাহ বাড়বে। পানি প্রবাহ বাড়ালে বুড়িগঙ্গার নাব্যতা আরও বাড়বে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সলিড বর্জ্য দূষণ থেকে রক্ষায় উত্তর সিটি করপোরেশনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এজন্য সমন্বিতভাবে কাজ করছি। না হলে কাজের ফল বিলম্বিত হবে। আশা করি, দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু করা যাবে। আর দক্ষিণের জন্য প্রকল্প নেওয়া হবে। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জন্য এ ধরনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। চট্টগ্রামেও প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে যাতে বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উপাদন করা যায়। তরল দূষণ থেকে রক্ষার জন্য ওয়াসার এমডিকে বলেছি, প্ল্যান্ট করার জন্য এগোচ্ছি। জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে দরপত্র করার জন্য কাজ চলছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিল্প-কারখানার তরল বর্জ্য নদীতে যায় সেজন্য ইটিপিগুলোর অপারেশন যেন নিশ্চিত থাকে। তাদের লোকবলের সমস্যা সমাধানের জন্য সভা থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের কাজ আরম্ভ হয়ে গেছে। ১০ বছরের মধ্যে শেষ হবে। প্রথম দফার কাজ সন্তোষজনক সময়ের মধ্যে শেষ হবে। আমাদের একবছর হয়ে গেছে। কোভিডের কারণে আউট ডোরের কাজগুলো সীমিত হয়ে গিয়েছিল।

এখন আমরা দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করছি। টেমস নদী দূষণমুক্ত করতে ৫০ বছর লেগেছে, দূষণমুক্ত করতে ৩৫ বছর লেগেছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

নৌ-মন্ত্রণালয়ের অধীন উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাকে একটি মহলের চাপে বদলি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টা আমি অবহিত নই যে তাকে বদলি করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের কারণ হলো কোভিড। অনেক কাজই আমরা আউট ডোরে কাজ করতে পারছি না। কোনো কর্মকর্তাকে বদলির বিষয়টি আমার নজরে নাই। কোনো কোনো জায়গায় মসজিদ-মন্দির আছে, সেগুলো একটু স্পর্শকাতর। এজন্য বুঝেশুনে মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করে করা হবে।

মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে নদীর তীরে পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং সেনা স্থাপনা থাকা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, নদীর জায়গা দখল যারা দখল করুক, পাওয়ার প্ল্যান্টের কথা বলেন আর যার কথাই বলেন আমি তো আইন তৈরি করিনি। আইন তৈরি করেছে জনপ্রতিনিধিরা আইন করেছে। জনগণ যে আইন করেছে সে আইন মেনে চলবেন। সেখানে কার কি, এটা নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কথা বলাটা খুব সঙ্গত না।

বৃত্তাকার নৌ-পথ বাস্তবায়ন নিয়ে ১৩টি ব্রিজের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা-প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেগুলো নৌ-পথে বাধার সৃষ্টি করছে সেগুলো রিভিউ করার জন্য আলোচনা হয়েছে। সেগুলো স্থানীয় সরকার বিভাগের হলে আমরা বসবো এবং সেগুলোকে ভেঙে জরুরিভিত্তিতে নির্মাণ করার চিন্তা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ