ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শীতে করোনা মোকাবিলার প্রস্তুতি আছে: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
শীতে করোনা মোকাবিলার প্রস্তুতি আছে: প্রধানমন্ত্রী ফাইল ছবি

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ও শীতকালে সংক্রমণ বৃদ্ধির যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব, সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারিকে সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ কিছুটা কমে এলেও যেকোনো মুহূর্তে তা আসন্ন শীতকালে আবার বেড়ে যেতে পারে বলে বিশেজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইতোমধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকায় দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও শীতকালে সংক্রমণ বৃদ্ধির যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আসন্ন শীত মৌসুমে যাতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ না বাড়তে পারে সেজন্য ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সারাদেশের পয়েন্ট অব এন্ট্রিসমূহ যথা— বিমান, স্থল, নৌবন্দরসমূহে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম ২১ জানুয়ারি থেকে অব্যাহত আছে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান (বিপিআরপি) তৈরি করা হয়েছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। করোনার বর্তমান ও আসন্ন শীতকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশব্যাপী গৃহীত কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৩ কোটি ভ্যাকসিন আমদানির লক্ষ্যে ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী সরকারিভাবে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কোয়ারেন্টিন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মোট ৩৬১টি কোয়ারেন্টিন সেন্টার প্রস্তুত আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা যাবে।

মহামারি চলাকালে ঝুঁকি মোকাবিলায় অপ্রয়োজনীয় জমায়েত, সভা, সেমিনার সীমিত রাখা, মসজিদ, মন্দির, বিবাহ, খেলাধুলা, সিনেমা, থিয়েটার ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। করোনা সংক্রমণ রোধে ব্যানার, লিফলেট, এক্স স্ট্যান্ড, ডিজিটাল ব্যানার, পেপার ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে এবং তা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

সরকারি দলের আরেক সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালে আমরা উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর কাছ থেকে জরুরি আপদকালীন অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকে আপদকালীন সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে। কোভিড-১৯ প্রতিরোধের জন্য এশিয় ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, করোনা ভাইরাসের টিকা ও চিকিৎসা সামগ্রী সংগ্রহের জন্য এডিবি আরও ৩০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দিচ্ছে। করোনাকালে কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্ব ব্যাংক ১০৫ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ১১০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা পেয়েছি। জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের জন্য ১১৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক আমাদের জন্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে।

আরও পড়ুন:
নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার কঠোর

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।