ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গোল্ডেন মনিরের ২০০ প্লটের বিষয়ে যাচাই করে সিদ্ধান্ত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২০
গোল্ডেন মনিরের ২০০ প্লটের বিষয়ে যাচাই করে সিদ্ধান্ত

ঢাকা: গোল্ডেন মনির খ্যাত রাজধানীর বাড্ডার ব্যবসায়ী মনির হোসেনের দুর্নীতির ঘটনায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান মো. সাঈদ নুর আলম।  

তিনি বলেন, গোল্ডেন মনিরের নামে ২০০ প্লটের বরাদ্দের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হবে।

 

রোববার (২২ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজউক চেয়ারম্যান সাঈদ নুর আলম বলেন, অনিয়ম রোধে রাজউকে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

শনিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর বাড্ডা এলাকার নিজ বাসা থেকে গোল্ডেন মনিরকে ৬০০ ভরি সোনার গহনা, বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০ দেশের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা জব্দ করা হয়। ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় দুই শতাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক গোল্ডেন মনির। রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে অসংখ্য প্লট হাতিয়ে নেন তিনি। তার বাড়ি থেকে অনুমোদনহীন ২০০টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়। যার প্রতিটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। এছাড়া তার ‘অটো কার সিলেকশন’ নামের গাড়ির শো-রুম থেকে আরও তিনটি অনুমোদনহীন বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।

গোল্ডেন মনিরের বাসা থেকে ২০০ প্লটের নথি জব্দ এবং বাড্ডার বাসা থেকে কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, এগুলো আমরা তদন্ত করবো। তদন্তে যারা শনাক্ত হবে তাদের সবার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং আদালতে যে মামলা আছে তা চলবেই।  

২০০ প্লটের মালিক হওয়ার পেছনে রাজউকের কারো সহযোগিতা বা ইন্ধন ছিল কি না- প্রশ্নে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, আমার ধারণা এটা এক দিনের প্রক্রিয়া নয়, এটা দীর্ঘ দিনের প্রক্রিয়া। আমরা এত দিনে উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। গতবছর প্রথম উদঘাটন হয় এবং তখন থেকে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এ ব্যবস্থা চলমান থাকবে এবং যতক্ষণ না সর্বশেষ বিষয়টি উদঘাটিত হচ্ছে।

প্লটগুলো বাতিল করবেন কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় যদি কোনো প্রকার ইয়ে (অনিয়ম-দুর্নীতি) থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই বাতিল করবো।  

একজন ২০০ প্লটের মালিক, এটা কি অনিয়ম না- প্রশ্নে তিনি বলেন, এগুলো যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন আছে। যাচাই বাছাইয়ের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত হবে।

রাজউকের গোল্ডেন মনিরকে ভিআইপি প্রটোকল দেওয়া প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, সরকারিভাবে যেভাবে নথি স্বাক্ষর হয় আমি সেই নিয়ম অনুসরণ করি। এখানে কাউকে কোনো প্রকার ভিআইপি প্রটোকল দেওয়া হয়নি বা এ ধরনের প্রটোকল দেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না। এখানে নিয়ম ভঙ্গে কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

রাজউকের সদস্য এবং চেয়ারম্যান হিসেবে আপনাদের দায় আছে কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তার অনিয়মগুলো উদঘাটন শুরু করেছি। উদঘাটন হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেগুলো উদঘাটন হবে সেগুলো বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আগে কেন ব্যবস্থা নেননি- প্রশ্নে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, গতবছর অভিযান ছিল সেটি রাজউকের নিজস্ব ছিল। আমরা আমাদের নিয়ম অনুযায়ী চলবো।

শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে কিনা- শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। নতুন করে আরও শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করবো। সেই পরিকল্পনা আমাদের আছে। ভবিষ্যতে কোনো প্রকার অনিয়মত থাকবে না।  

রাজউক ভবনে মনিরের একটি অফিসের অনেক কাগজপত্র পাওয়া গেছে, এর সঙ্গে রাজউকের অনেকেই জড়িত- এ নিয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান সাঈদ নুর বলেন, গতবছরে রাজউকের চেয়ারম্যান ছিলেন সুলতান আহমেদ। সে সময় আমি সদস্য (প্রশাসন) ছিলাম। আমাদের সবার একটি অভিযান পরিচালতি হয়েছিল রাজউকেরই একটি কক্ষে। এ কক্ষটি বাহিরে ভাড়া দেওয়া ছিল। এ কক্ষ থেকে আমরা ৭২টি নথি উদ্ধার করেছি। সেই নথি উদ্ধারের পরিপ্রেক্ষিতে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেছি। সেই সময়ই একজন কর্মচারী আটক হন তাকে আমরা থানায় সোপর্দ করি। এ বিষয়টি এখনও বিচারাধীন আছে। সেই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছি এবং মামলা চলমান রয়েছে। তদন্তও চলছে। এরসঙ্গে আর যারা জড়িত আছে, পুলিশ চার্জশিট দিলে এবং শনাক্ত হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২০
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।