ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২০
স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকা ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ৪১তম ও সর্বশেষ স্প্যান বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো। এর উপরে যানবাহন চলাচলের রাস্তা আর ট্রেনের জন্য স্লিপার বসানো হবে।

আগেই তৈরি হয়েছে পদ্মার দুই পাড়ের সংযোগ সড়কের কাজ। সবমিলিয়ে পদ্মা সেতুর ব্যয় দাঁড়াবে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সেতুর ১২ এবং ১৩ নম্বর পিয়ারের মাঝে বসানো হয়েছে ৪১তম স্প্যান। এর মাধ্যমে মূল কাঠামো পেল বিশ্বের ১১তম দীর্ঘ সেতু।

২০১৩ সালে সেতুর নকশা প্রণয়নের পর ২০১৮ সালে সেতু চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে সর্বশেষ সময় বাড়িয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সেতু চালুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০০৭ সালে প্রথমবার একনেকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। ২০১১ সালে সেখানে প্রথমবারের মতো সংশোধনী আনা হয়। সংশোধনী ব্যয় নির্ধারিত হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০১৮ সালেই আবার প্রকল্প সংশোধন না করেই ব্যয় বাড়ানো হয়। চূড়ান্ত ব্যয় নির্ধারিত হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

তবে এই ব্যয় আরও বৃদ্ধি পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ২২টি খুঁটির নকশা সংশোধন, নদীশাসন কাজে বিলম্ব এবং নদীভাঙ্গন ও প্রবল স্রোতের কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়েছে। এর সাথে করোনাভাইরাসের কারণেও দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ ছিল। ফলে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের সময়।

মূল সেতু নির্মাণ এবং নদীশাসনসহ বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে সেতুর ব্যয় আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এছাড়াও মূল সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় তাদের লোকবল বসিয়ে রাখার জন্য সরকারের কাছে খরচ চাইছে। ‘ম্যানেজমেন্ট কস্ট’ এর নামে প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক ৩৯ লাখ টাকা দাবি করছে। তবে সেতু বিভাগ ২৮ লাখ টাকা দেবে জানিয়েছে। দর কষাকষি করে ৩০ লাখ টাকায় ঠেকলেও সরকারকে আরও দিতে হবে ২৮৫ কোটি টাকা।

পাশাপাশি বাড়তি সময় ভারী যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে পড়ে থাকার কারণে বাড়তি খরচও চাইছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারদের এমন তিন শতাধিক দাবি (ক্লেইম) নিষ্পত্তি করতে হবে। এসব দাবি ঠিকাদারদের পক্ষে গেলে খরচ বাড়বে আরও।

একইভাবে নদীর তলদেশে ৩০ লাখ বালুর বস্তা ফেলার টাকা দিতে হবে বালু ফেলায় নিয়োজিত ঠিকাদারকে। নদীভাঙন মেরামতেরও খরচ চাইছে তারা।

নিয়ম অনুযায়ী, বছররের পর বছর পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেলে ঠিকাদারকে বাড়তি টাকা দিতে হয়। এজন্য পদ্মা সেতু প্রকল্পে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা ধরা আছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ যেভাবে বাড়ছে তাতে খরচ আরও দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঠিকাদারের ভ্যাট ও আয়কর বেড়েছে ৪ শতাংশ। বিদেশি পরামর্শকদের ভ্যাট ও কর বেড়েছে ১০ শতাংশ। দেশীয় পরামর্শকদের ভ্যাট ও কর বেড়েছে ২ শতাংশ। এই তিন খাতে ভ্যাট ও কর বাবদ ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ ৬৮৬ কোটি টাকা। এগুলো সামনে যোগ করতে হবে।

অনেক কিছু বাড়লেও কমবে গ্যাসলাইন বসানোর খরচ। কিন্তু ৪০০ কেভি বিদ্যুতের লাইন বসানোর কাজে খরচ বাড়বে।

ইতোমধ্যে যেসব খরচ বেড়েছে, সামনে যা বাড়বে, সব মিলিয়ে আরেক দফা প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করতে হবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২০
এসএইচএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।