ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্কুলছাত্র শামনুনকে হত্যা করে অপহরণের নাটক!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২০
স্কুলছাত্র শামনুনকে হত্যা করে অপহরণের নাটক!

ঢাকা: মিরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শামনুন হোসেনকে (১১) হত্যা করে অপহরণের নাটক সাজানো হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। মুক্তিপণের টাকা দিয়েও বাঁচাতে পারেনি শামনুনকে।

 

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান নিহত শামনুনের বাবা ইউনুস আলী প্রদীপ।

শামনুনের বাবা প্রদীপ বলেন, আমার ছেলের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের মধ্যে একজন আমার সৎ ভাই, অন্য আরেকজন আমার বড় বোনের ছেলে (ভাগ্নে)। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আমার পরিবারের দুইজন সদস্য। এই হত্যা টাকার জন্য হয়নি, পারিবারিক শত্রুতা থেকেই হয়েছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

মুক্তিপণের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমে মুক্তিপণের জন্য অপহরণকারীরা আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চায়। একটা পর্যায়ে তাদের সাথে কথা বলে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা দিলে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর পুরাতন বই বিক্রির দোকানের সামনে টাকা দেওয়ার কথা বলে। টাকা দিতে গেলে ফোন করে ওরা বলে, তোরা পুলিশ আনছিস এভাবে টাকা নিব না। বিকাশে টাকা নিব। তখন আমি শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বিকাশে ৬০ হাজার টাকা পাঠাই।

প্রদীপ আরো বলেন, মিরপুর ৬ নম্বর এলাকায় আমার বসবাস। আমার পরিচিতি থাকতেই পারে। আমাকে হিংসার বশেই এই হত্যাকাণ্ড করা হয়েছে। তৃতীয় কোনো পক্ষ দিয়ে আমার পরিবারকে দুর্বল করার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিনা তা আমার সৎ ভাই ও আমার ছেলের হত্যাকারী রনি গ্রেফতার হলে মূল রহস্য উদ্ঘাটন হবে। রনি ও আমার ভাগ্নে প্রলয় এরা দুজনই মাদকাসক্ত। এদেরকে দিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।  

নিহতের স্বজনরা জানায়, নিহত শিশুর ছোট বোন রাফিয়া ইউনুস (৫), মা রোকসানা পারভীন রুপা ও তার সৎ-বাবা ইউনুস আলী প্রদীপের সঙ্গে মিরপুর সেকশন-৬ এলাকায় থাকত। বৃহস্পতিবার শামনুন নিখোঁজ হয়। পরে শামনুনের সৎ-চাচা রনি ও শামনুনের ফুপাতো ভাই প্রলয় অপহরণের নাটক সাজান।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সে নিখোঁজ হলে পরিবারের লোকজন থানায় একটি জিডি করেন।

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুর-১০ শাহআলি প্লাজা ছাদ সংলগ্ন ১৫ তলা সিঁড়ি থেকে গলায় তার পেঁচানো অবস্থায় ওই ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের মা রোকসানা পারভীন রুপা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি মাহফুজুর রহমান রনি পলাতক আছেন। তবে অন্য চার আসামি- নূর আলম প্রলয়, প্রলয়ের বন্ধু ইউসুফ নেওয়াজ, খায়রুল ইসলাম এবং ইয়াসিন আফাত কবিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই তামিম রহমান সোমবার বাংলানিউজকে বলেন, কিভাবে হত্যা করেছে তা আমরা জানতে পেরেছি। কি কারণে হত্যা হয়েছে এখনো জানতে পারিনি। এই ঘটনার সাথে জড়িত একজন আসামি পলাতক আছে। আসামি রনি গ্রেফতার হলে হত্যার মূল কারণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২০
এমএমআই/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।