ঢাকা: ‘সেইদিন আর নেই করোনায় সব খাইছে। করোনার জন্য এখন হাসপাতালেও যাত্রী পাই না।
রিকশাচালক গিয়াস উদ্দিন কথাটি বলছিলেন এক যাত্রীকে উদ্দেশ্য করে। ওই যাত্রীকে তিনি আরও বলতে থাকেন, ‘ভাড়া কম দিয়েন না, এমনিতেই যাত্রী নাই। খালি রিকশা নিয়া ঘণ্টাখানেক দাঁড়াইয়া আছি। ’
রিকশাচালক গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, করোনার কারণে যাত্রী কমে গেছে। করোনার আগে বিশ্রাম নিতেও পারতেন না তিনি, কিন্তু এখন দীর্ঘ সময় বসে থেকেই যাত্রীর দেখা পান না।
তার ভাষ্যে, ‘আগে রিকশা চালাতে চালাতে ক্লান্ত হয়ে গেলে রাস্তার পাশে কোনো দোকানে বিশ্রাম নিয়ে কিছু খাইতাম। তখন রাস্তায় চলাচলকারী অনেক যাত্রী কইতো, ওই খালি যাইবেন? আর এখন ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের সামনেও রিকশা নিয়ে দাঁড়াইয়া থাকতে হয় যাত্রীর অপেক্ষায়। এই করোনার সময় হাসপাতালেও যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা কম। তাছাড়া রোগী থাকলেও তাদের তেমন কেউ দেখতে যাচ্ছে না। ’
করোনার আসার আগে হাসপাতালের সামনে কোন যাত্রী নামানোর সঙ্গে সঙ্গে অন্য অনেক যাত্রী ছুটে এসে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বলতেন বলেও জানান তিনি।
বৃদ্ধ এই রিকশাচালক বলেন, ‘আমাগো আয় কমে গেছে। সংসার চালাতে পারতাছি না। রিকশা চালানো অনেক কষ্টের, একটু পরপর খিদা লাগে। রিকশা মালিকের জমার টাকা ও সারাদিন রাস্তায় আমার খরচ- এসব টাকা উঠলেও সংসার চালানোর খরচ আর থাকে না!’
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য রিকশাচালকরাও প্রায় একই কথা বলেন। তারা জানান, করোনার আগে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে যাত্রীদের খোঁজে আসা লাগতো না। হাসপাতালের সামনের রাস্তায় দাঁড়ালেই যাত্রীর অভাব হতো না। আর এখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক ঘণ্টার মতো দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
এজেডএস/জেআইএম