সিলেট: জনদুর্ভোগের পর স্থগিত হলো সিলেট বিভাগে চলমান ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদের এক সভায় ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংগঠনটির সভাপতি গোলাম হাদি ছয়ফুল জানান, শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোর ৬ টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালনের কথা ছিল। কিন্তু বড়দিন ও শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতে আসা মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে ১২ ঘণ্টার আগেই ধর্মঘট স্থগিত করা হলো।
সিলেটে সকল পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে গত সোমবার (২১ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ। বৈঠকে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) থেকে ৭২ ঘণ্টার টানা ধর্মঘট আহ্বান করা হয়।
এছাড়া ৫ দফা দাবিতে গত সোমবার থেকে সিএনজি অটোরিকশার ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করে আসছিল। ফলে সিলেটের অভ্যন্তরে এবং দূর পাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সিলেটে এসে আটকা পড়েন বাইরে থেকে আসা লোকজনও।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া—এই পাঁচটি কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) দায়ের করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দিনমজুর শ্রমিকদের অজুহাত দেখিয়ে পাথর খেকোদের পক্ষে আন্দোলনে নামেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ।
এ নিয়ে তারা সভা সমাবেশ করে সফল হতে না পেরে ধর্মঘটে করে দাবি আদায় করার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে পাথর কোয়ারি ইস্যুতে আন্দোলনকারীদের নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষকেও বিক্ষুব্ধ করে তুলছেন তারা। যে কারণে আন্দোলন সীমিত করা হয়। অবশ্য তাদের দাবি উপেক্ষা করে অনড় রয়েছে সিলেটের প্রশাসন।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতারা বলছেন, তারা ৬০ ঘণ্টার জন্য ধর্মঘট স্থগিত করেছেন। পরবর্তীতে রোববার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে আন্দোলনের নতুন ঘোষণা আসতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
এনইউ/জেআইএম