ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও হানাদার মুক্ত দিবস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২১
৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও হানাদার মুক্ত দিবস

ঠাকুরগাঁও:  ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়েছিল দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা ঠাকুরগাঁও।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দুর্বার প্রতিরোধে নভেম্বরের শেষ থেকেই পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানি সৈন্যরা।  
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দিনটি উপলক্ষে নানান কর্মসূচি পালন করবে বিভিন্ন সংগঠন।

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও পাকিস্তানি বাহিনী থেকে মুক্ত হয়। এ কারণেই আজকের দিনটিকে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারো নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের পর সারা দেশের মতো ঠাকুরগাঁয়েও পাকিস্তানি সৈন্যরা আক্রমণ করে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠনে মেতে ওঠে তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাটিভাঙ্গা ও রানীশংকৈল খুনিয়া দীঘির পাড়ে মুক্তিকামীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। ১৭ এপ্রিল জগন্নাথপুর, গড়েয়া শুখাপনপুকুরী এলাকার মুক্তিকামী মানুষ ভারত অভিমুখে যাত্রাকালে স্থানীয় রাজাকাররা তাদের আটক করে। পরে তাদের পাথরাজ নদীর তীরে গুলি করে হত্যা করা হয়।
একইভাবে রানীশংকৈল উপজেলার খুনিয়া দীঘির পাড়ে গণহত্যা চালানো হয়। পাকিস্তানি বাহিনী হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার নিরীহ সাধারণ মানুষকে লাইনে দাঁড়করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। নির্বিচারে হত্যার কারণে পরবর্তীকালে এটি খুনিয়া দীঘি নামে পরিচিতি লাভ করে।
১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিলের মধ্যেই আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর দখলে চলে যায় ঠাকুরগাঁও। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিরোধে সংগঠিত হতে থাকে ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিকামী মানুষরাও।  
স্কোয়াড্রন লিডার এম খাদেমুল বাশারের নেতৃত্বে ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন তৎকালীন ঠাকুরগাঁও মহকুমার মুক্তিকামী মানুষেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার মাটিকে হানাদারমুক্ত করতে।  
২৯ নভেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ের তৎকালীন পঞ্চগড় থানা প্রথম শত্রুমুক্ত হয়। পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর মনোবল ভেঙে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর।
২ ডিসেম্বর রাতে ঠাকুরগাঁয়ে প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপণ লড়াইয়ে সে রাতেই শত্রুবাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটতে শুরু করে। অবস্থান নেয় ২৫ মাইল নামক স্থানে।  
৩ ডিসেম্বর ভোররাতে শত্রুমুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও শহর। সকাল থেকেই ঠাকুরগাঁও শহরে মানুষ জড়ো হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন স্থানে বের হয় আনন্দ মিছিল। হাজার মানুষের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয় ঠাকুরগাঁওয়ের পথঘাট।

বাংলাদেশ সময়:  ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।