ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বোমা হামলার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২১
বোমা হামলার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা কথা বলছেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, ইনসাটে গ্রেফতার জঙ্গিরা ও জব্দ হওয়া সরঞ্জাম। ছবি: বাংলানিউজ

রংপুর: ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভিডিও দেখে বোমা তৈরি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থাপনায় হামলা চালিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করছিলেন জঙ্গিরা।

নীলফামারীতে গ্রেফতারকৃত পাঁচ জঙ্গি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এতে জানানো হয়, শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৩ এর অভিযানে নীলফামারী সদরের মাঝাপাড়া থেকে জেএমবির নীলফামারীর রংপুর অঞ্চলের জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান নীলফামারীর উত্তর মুশরত এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে আহিদুল ইসলাম ওরফে আহিদ, পাঠানপাড়া এলাকার ওয়াজ্জুউদ্দীনের ছেলে ওয়াহেদ আলী, দক্ষিণ বালাপাড়ার তছলিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডা. সুজা উত্তর মুশরত কুখাপাড়ার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে জাহিফুল ইসলাম, সোনারাই কাচারীপাড়া এলাকার মৃত রজব আলীর ছেলে নূর আমিন ওরফে সবুজকে গ্রেফতার করা হয়।

অভিযানে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ব্যবহৃত রাসায়নিকদ্রব্য, পিস্তল, ম্যাগজিন, ৫ রাউন্ড গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদী জব্দ করা হয়। তারা জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য।

সামরিক শাখার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তারা; আইইডি তৈরি ও এর প্রশিক্ষণ অনুশীলন এবং নাশকতামূলক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ২/৩ মাস আগে জঙ্গি আহিদুল ইসলাম ওরফে আহিদের বাড়িতে ইমপ্রভাইজড এক্সপ্লোসিভস ডিভাইস (আইইডি) তৈরি করছিল। ওই বোমা তৈরির সময় গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে আহিদুলের বাড়িতে আগুন ধরে যায়। তারা ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েব পেজ দেখে কিভাবে বোমা তৈরি করতে হয় এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়। জেলখানায় থাকার সময় শীর্ষ জঙ্গিদের জেলখানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া-আসার পথে হামলা চালিয়ে তাদেরকে মুক্ত করা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার লক্ষ্যে তারা এই বোমাগুলো বানাচ্ছিল।

গ্রেফতার জঙ্গিরা জানায়, তারা অনলাইনে রংপুর অঞ্চলের আমিরের নির্দেশনায় বেশ কয়েকদিন ধরে আইইডি বানিয়ে জঙ্গি শরীফের বাড়িতে রাখেন। তারা রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ২০-২৫ জনকে জঙ্গি সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করেন। তাদের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের বেশ কয়েকজন শ্রমিক, অটোচালক, টেইলার ইত্যাদি শ্রেণি-পেশাজীবীদের জঙ্গিবাদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

এতে আরও জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত জঙ্গি আহিদুল ইসলাম ওরফে আহিদ ওরফে পলাশ একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কোম্পানির কোয়ালিটি চেকার চাকরির আড়ালে তিনি জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তিনি জেএমবির রংপুর অঞ্চলের সামরিক শাখার প্রধান। তিনি ২০১৫ সালে জেএমবিতে যোগ দেন। তিনি রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক নেতা হতে বায়াত গ্রহণ করেন।

জঙ্গি আহিদুল ওই অঞ্চলে জেএমবির সামরিক শাখার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।  গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়।

এ সময় র‍্যাব হেডকোয়ার্টার ও র‍্যাব-১৩ এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নীলফামারীতে ‘জঙ্গি আস্তানা’ ঘিরে রেখেছে র‍্যাব

নীলফামারীতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান, আটক ২

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।