ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হাত হারানো তামিমকে তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
হাত হারানো তামিমকে তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে পল্লী বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গুরুতর আহত হয়ে হাত হারানো শিশু তামিম ইকবালের (১২) চিকিৎসা খরচ বাবদ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিকে তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশে দিয়ে উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে তার পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না আদালত তাও জানতে চেয়েছে।

শিশু তামিমের বাবা শাহাদাত হোসেনের দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) উচ্চ আদালতের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে জ্বালানি সচিব, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, লক্ষ্মীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট পাঁচজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তার সহযোগী আইনজীবী ফুয়াদ হাসান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, শিশু তামিমের বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার পরিবারের ক্ষতি ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ কেটি টাকা এবং তামিমের চিকিৎসা বাবদ ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। আদালতে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা খরচ বাবদ লক্ষ্মীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া নির্দেশ দিয়েছেন।  

জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের চর টবগী গ্রামের দিনমজুর শাহাদাত হোসেনের ছেলে তামিম ইকবাল। সে স্থানীয় কাটাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

শিশু তামিমের বাবা শাহাদাত হোসেন উচ্চ আদালতে রিট দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলে তামিম গত দুই মাস ১০ দিন থেকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অভাব অনটনের সংসারে তার চিকিৎসা খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  

তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় তামিমের বাম হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। তার জীবন এখনো সংকটাপন্ন। এ ঘটনায় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলাকে দায়ী করছেন তিনি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে লক্ষ্মীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. আবু তাহের বাংলানিউজকে বলেন, নদী ভাঙনের কারণে নদীর পাড়ে থাকা একটি খুঁটি হেলে পড়ে। তবে খুঁটিতে থাকা ক্যাবল উপরে ঝুলে ছিল। যদি মাটিতে লেগে থাকতো তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু বিষয়টি স্থানীয়ভাবে কেউ আমাদের জানায়নি। তাই হয়তো তারে লেগে ওই শিশুটি দুর্ঘটনার মধ্যে পড়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ঘটনাটি জানতে পেরে শিশুটির খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং তাকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতাও করেছি। আদালতের আদেশের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান ।

এদিকে আর্থিক সহযোগীতার বিষয়ে শিশুর বাবা শাহাদাত হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার অনেক পরে বিদ্যুৎ অফিস থেকে কেউ একজন আমাকে ফোন করেছে। কিন্তু কোনো আর্থিক সহযোগীতা করা হয়নি।  

তামিমের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীর ভাঙনে ২৩ সেপ্টেম্বর চর টবগী গ্রামের একটি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। এরপর থেকে ওই খুঁটির বিদ্যুতের খোলা ক্যাবলগুলো এলোমেলোভাবে নদীর পাড়ে পড়ে ছিল। ২৫ সেপ্টেম্বর তামিম নদীতে গোসল করতে গেলে বিদ্যুতের ক্যাবলে জড়িয়ে মারাত্মক আহত হন।

তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে স্থানীয়রা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির রামগতির জোনাল অফিসে অবগত করলেও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শিশুটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।