ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিবির-ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে এসে আ. লীগ কর্মী খুনের মিশনে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
শিবির-ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে এসে  আ. লীগ কর্মী খুনের মিশনে

ফেনী: ফেনীর পরশুরামে আলোচিত শাহীন হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টোর সঙ্গে আসছে ছাত্রলীগ নেতা আবদুল আহাদ চৌধুরীর নামও। বেরিয়ে আসছে তার অতীত কর্মকাণ্ড।

শিবির, ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে এসে আওয়ামী লীগ কর্মী খুনের মিশনে অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। সে কারণেই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ভুট্টোর মতো আহাদও চলে গেছেন লোক চক্ষুর অন্তরালে।
 
নীতি-আদর্শের কথা ভুলে ফায়দা লুটতে পরশুরামসহ পুরো ফেনীতে অতীতে অনেকেই যোগ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলে। ছাত্রদল ও শিবির ছেড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশকারী পরশুরাম উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আবদুল আহাদ চৌধুরীও এদের একজন।

বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, আহাদের শিবিরের রাজনীতির মধ্য দিয়ে উত্থান হলেও পরবর্তী ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন।

পরশুরামের সুবার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হয়ে ছাত্র শিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনীতিতে উত্থান হয় আবদুল আহাদ চৌধুরীর। পরে ২০১২ সালে শিবিরের রাজনীতি ছেড়ে মাদ্রাসা ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে স্থানীয় ছাত্রলীগের হাতে বেধড়ক পিটুনী খান আবদুল আহাদ।

এরপর ছাত্রদল থেকে আবার দল পরিবর্তন করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ২০১৩-১৪ সালে গঠিত সুবার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। পরে ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মির্জানগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন তিনি। তারপর থেকে পরশুরাম উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন আহাদ চৌধুরী।

মির্জানগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক রবিউল করিম চৌধুরী রবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, আজকে থেকে প্রায় ৭-৮ বছর আগে আহাদকে যখন পেটাই তখন সে ছাত্রদল করতো। সেটা সবাই জানে। তখন আমি ছাত্রলীগের আহবায়ক ছিলাম। একজন ছাত্রদলের ছেলেকে মারার অপরাধে ২-৩ ঘন্টা পরে আমিসহ ছাত্রলীগের ৪-৫ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং মামলা করে এলাকা ছাড়া করে।

এখন প্রশ্ন হলো, নিহত শাহিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের নিবেদিত একজন ব্যক্তি ছিলেন। দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা। আমার অবাক লাগে জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ এখনো পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দলীয় কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তাহলে বিষয়টা দ্বারা কি বোঝা যায়?

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে মির্জানগর ইউনিয়নের উত্তর বাজার এলাকার সাবেক মেম্বার বাবুলের দোকানে আওয়ামীগ কর্মী শাহীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।

হত্যাকাণ্ডে নিহত শাহীন চৌধুরী ছিলেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মী। পরিবার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে নিজ এলাকার বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও শাহীন নৌকা প্রতীকের নুরুজ্জামান ভুট্টোর নির্বাচন করেছেন। এছাড়া দলের দুঃসময়ে শাহীন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

শাহীনের মেয়ে সোনিয়া ক্রন্দনরত হয়ে বলেন, বাবা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টোর জন্য নির্বাচনে নিজের চাচাকে সমর্থন না দিয়ে নৌকার ভোট করেছে, আর তার হাতেই খুন হলেন তিনি। এমন কাজ করতে সে একটুও ভাবেনি। আমাদের এমন নিঃস্ব করার বিচার চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
এসএইচডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।