ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বৈসাবি উৎসবে বর্ণিল আয়োজনে মাতবে পাহাড়ের জীবন

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২২
বৈসাবি উৎসবে বর্ণিল আয়োজনে মাতবে পাহাড়ের জীবন

খাগড়াছড়ি: গেল দুইটি বছর যেন শুধুই বেঁচে থাকা। মহামারি করোনার থাবায় সব হয়ে গেছে ওলোট পালট।

পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে পারার সেকি চেষ্টা। তবে এবার স্বাভাবিক হওয়া জীবনে শঙ্কা উড়িয়ে শুধু বেঁচে থাকা নয় কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে ফিরে যাবার সময়।

পার্বত্য জনপদের শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়েছে খুশির রেশ। কারণ কদিন পর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী 'বৈসাবি উৎসব। ইতোমধ্যে উৎসব ঘিরে তিন পার্বত্য জেলায় নানা আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। নতুন কাপড় কেনাকাটা থেকে অতিথি আপ্যায়নের সব প্রস্তুতি চলছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঘরে ঘরে।

আগামী ১২ এপ্রিল নদীতে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হবে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। ধর্মীয়, সামাজিক রীতিনীতিতে সপ্তাহব্যাপী চলবে এই উৎসব।

বাংলা নববর্ষের আগে এবং পরে পাহাড়ের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন নামে এই উৎসব পালন করে। তবে দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী এই উৎসব পালন করায় তা আর পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

গত দুই বছর করোনার কারণে এই উৎসব শুধুমাত্র ঘরোয়াভাবে পালন করা হয়। ছিল না বাড়তি কোনো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজন। রুদ্ধশ্বাস পরিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে তাই এবার উৎসব আয়োজনে বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

পাহাড়ে বহু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বসবাস করলেও মূলত তিন জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক আয়োজন নিয়ে উৎসবের পরিমণ্ডল। পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘বৈসাবি’ নামে বেশি পরিচিত। মূলত তিন জাতিগোষ্ঠীর উৎসবের প্রথম অদ্যাক্ষর দিয়ে উৎসবের নামকরণ।

ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর বৈসু উৎসবের ‘বৈ’, মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই উৎসবের ‘সা’ এবং চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু উৎসবের ‘বি’ দিয়ে নামকরণ করা হয় ‘বৈসাবি’ উৎসবের।

আগামী ১২ এপ্রিল উৎসবের প্রথম দিন বিশ্ব শান্তির মঙ্গল ও পরিবার-পরিজনের সুখ শান্তি কামনায় নদীতে ফুল ভাসিয়ে প্রার্থনা করা হবে।

ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠী তিন দিনব্যাপী বৈসু উৎসব পালন করে থাকে। প্রথম দিন হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিন বৈসুমা এবং শেষ দিন আতাদাক বা বিছিকাতাল। মারমারা চার দিনব্যাপী উৎসবটি পালন করে। প্রথম দিন সাংগ্রাই, দ্বিতীয় দিন আক্যে, তৃতীয় দিন আতাদা এবং শেষ দিন আতং। চাকমা জাতিগোষ্ঠী ফুল বিজু, মূল বিজু ও গজ্জাপজ্জা নামে তিন দিনব্যাপী এই উসব পালন করবে।

উৎসবের দিনগুলোতে বন জঙ্গল থেকে ফুল সংগ্রহ করে নদীতে ভাসানো, ঘর সাজানো, পূজা অর্চনাসহ অতিথি আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী ভিন্ন নামে এই উৎসব পালন করে থাকে।

পরিবেশ-পরিস্থিতি, ধনী-গরীব, নানা বাস্তবতায় আয়োজনে পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু শেকড়ের খোঁজে সবার লক্ষ্য এক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২২
এডি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।