ঢাকা: ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের ১৮টি কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। কাউন্টারগুলোর মধ্যে ২টি কাউন্টার নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা যায়, রেলস্টেশনে নারীদের জন্য দুটি কাউন্টার রয়েছে। তবে নারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এক একটি লাইন এঁকেবেঁকে অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়েছে। গাদাগাদি চাপাচাপিতে গরমে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন তারা। এছাড়া গরম এতটাই বেশি ছিল যে, প্রায় প্রত্যেকের হাতেই এসময় হাতপাখার দেখা মিলেছে।
প্রয়োজনের তুলনায় নারীদের জন্য মাত্র ২টি কাউন্টার একেবারেই নগণ্য বলেও জানিয়েছেন স্টেশনে আগত টিকিটপ্রত্যাশী নারীরা। ভোগান্তি এড়াতে অন্তত পাঁচটি কাউন্টার নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার দাবি তাদের।
এ বিষয়ে আরিফা আক্তার নামে এক নারী টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, এখানে ১৮টি কাউন্টারের মধ্যে মাত্র দুটি কাউন্টারে নারীদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই কম হয়েছে। এখান থেকে আবার প্রতিবন্ধীদেরও টিকিট দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য টিকিটের কাউন্টার সংখ্যা আরও বাড়ানো। সীমা জাহান নামে অপর এক টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, নারীরা দীর্ঘসময় কোনো স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। এখানে তাদের নানা সমস্যা, শারীরিক অসুস্থতা থাকতে পারে। নারীদের কাউন্টারের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত কর্তৃপক্ষের। এছাড়া এখানে এতো গরম, এতেও অনেক সমস্যা। বিশেষ করে অনেক বয়স্ক মানুষও আছেন। স্টেশনে ফ্যানের সংখ্যাও অনেক কম। তীব্র গরম আর ভিড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।
এদিকে অগ্রিম টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষের আলাদা কাউন্টার থাকলেও নারীদের লাইনের পুরুষদের ঢুকে পড়ার অভিযোগ করেছে একাধিক নারী। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগছেন লাইনে থাকা বিভিন্ন বয়সের নারীরা। এ বিষয়ে তারিন নামে এক টিকিটপ্রত্যাশী নারী বলেন, এখানে মাত্র দুটি লাইন আমাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই কোথা থেকে কয়েকজন পুরুষ আমাদের লাইনের শুরুতে ভিড় করছে মাঝে মধ্যেই। এটা আমাদের জন্য অস্বস্তিকর। এই বিষয়গুলো আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত কর্তৃপক্ষের। আমরা ভোর থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, আর তারা মাঝে ঢুকে টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। নারীদের লাইনে শুধু নারীরাই থাকবে। এখানে ছেলেরা আসবে কেন! আমরাতো তাদের লাইনে যাইনি। এটি আমাদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর।
সার্বিক বিষয়ে নিয়ে কথা হয় কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছর নারী ও প্রতিবন্ধীদের একটি কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হতো। এবছর তাদের জন্য দুটি কাউন্টার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আশা করছি, সবাই সুষ্ঠুভাবেই টিকিট পাবেন। কাউন্টারে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী, রেল পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করছে।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) দেওয়া হয় ২৮ এপ্রিলের টিকিট। আজ দেওয়া হচ্ছে ২৯ এপ্রিলের টিকিট। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দেওয়া হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট। আর ২৭ এপ্রিল দেওয়া হবে ১ মে’র টিকিট। এছাড়া ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মে’র ট্রেনের টিকিট। ঈদ যাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে। এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এইচএমএস/এএটি