খুলনা: খুলনা মহানগরীর খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের মডেল শপিং কমপ্লেক্সের ৩০টি দোকান হঠাৎ করেই বন্ধ করে দিয়েছে কর্মকর্তারা। ইনস্টিটিউটের কর্মহীন হয়ে পড়া কর্মকর্তারা দোকানগুলোর দখল নিতে ঈদের মাত্র ১২ দিন আগে বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম।
এ সময় লিখিত বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমরা খুলনা মহানগরীর খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের মডেল শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী। এ কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ধরনের ৩০টি দোকান রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে আমরা দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছি। গত ২০১৯ সালের ২ জুলাই বিজেএমসি সব জুট মিল বন্ধ করে দেয়। এরপর পাটকল শ্রমিক সংগঠন দ্বারা পরিচালিত খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। খালিশপুরের মিলগুলো বন্ধের পর ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কারণ হাজার হাজার শ্রমিক এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। খালিশপুর অনেকটা ফাঁকা। ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা নেই বললেই চলে। এছাড়া করোনায় গত দুইবছরে ব্যবসায়ীদের পঙ্গু করে ফেলেছে। সব মিলিয়ে আসন্ন ঈদে ব্যবসায়ীরা বেচাবিক্রি করে লাভের মুখ দেখবে বলে স্বপ্ন দেখে। সে মুহূর্তে মরার ওপর খাড়ার ঘা’র মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে আমাদের। গত ২০ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার দিকে পাটকলের সাবেক শ্রমিক নেতা মুরাদ হোসেন ও হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল শ্রমিক নেতা আমাদের মডেল শপিং কমপ্লেক্সের গেট তালা দিয়ে দেয়। এমন কি তালা যাতে না খুলতে পারে এ জন্য সিলগালা করা হয়। অনেক দপ্তরে এ ব্যাপারে ছুটাছুটি করলেও তালা খোলার কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এতে করে আমারা পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, এই মার্কেট সংলগ্ন জায়গাটি খুলনা জেলা প্রশাসকের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি হিসেবে ১৯৬২ সালের রেকর্ড রয়েছে। খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের নামে মার্কেটের জমি বরাদ্দ বা মালিকানা নেই। কিন্তু দোকান টিকিয়ে রাখার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ছুটাছুটি করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। অবশেষে গত ২০২১ সালের ৯ জুন খুলনা জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ীরা। যার মিস কেস নং-৩০/২০২১। ওই মামলায় শুনানি শেষে আদালতে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ভাড়ার টাকা প্রতি মাসে আদালতে জমা দিয়ে আসছি।
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ঈদের আগে মালামাল দিয়ে দোকান ভর্তি করি। কিন্তু ওই মালামাল বিক্রি করতে না পারলে আমরা ঋণ পরিশোধ করতে পারব না। আমাদের পথে বসতে হবে। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে।
দোকানগুলো অবিলম্বে ফিরে পেতে স্থানীয় সংসদ সদস্য শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমপ্লেক্সের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. নজরুল ইসলাম সজল, আতিয়ার শেখ, মো. শাহিন সরদার, নুরুল ইসলাম, মোস্তাক আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম, হাজী শহিদ, শরিফুল ইসলাম, নিয়াজ, নুরুল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড