ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গৃহবধূকে পুকুরে ফেলে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার হননি সেই রুমা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
গৃহবধূকে পুকুরে ফেলে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার হননি সেই রুমা

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের শিউলি আক্তারকে (১৯) স্বামীর বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঝগড়াকান্দা গ্রামে শরীরে মরিচের গুড়া মাখিয়ে হাত-পা বেঁধে পুকুরে ফেলে নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

যৌতুকের জন্য করা নির্যাতনের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী রাজন মিয়া ওরফে রফিকুল ইসলাম গ্রেফতার হলেও পলাতক রয়েছেন নির্যাতনের সহযোগী ও ভিডিও ধারণকারী রুমা আক্তার।

 

মঙ্গলবার (১৭ মে) ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাসিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নির্যাতনের পর গৃহবধূ শিউলি আক্তারকে ঈশ্বরগঞ্জ বাবারবাড়ি নিয়ে আসে স্বামী রাজন। এর আগেই নির্যাতনের সময় ধারণ করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

স্বামী রাজন বিষয়টি বুঝতে না পেরে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীকে রেখে যেতে আসেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সামনেই স্ত্রী শিউলি আক্তারকে ফের মারধর করেন।

স্থানীয়রা রাজনকে আটক করে থানায় সোর্পদ করে। পরে গৃহবধূর বাবা সাইদুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় স্বামী রাজন ও তার ভাবি নির্যাতনের ভিডিওধারনকারী রুমা আক্তারকে।

ওসি আরও জানান, ওই মামলায় স্বামী রাজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে পলাতক থাকায় এখনো মামলার অন্য আসামি রুমা আক্তারকে গ্রেফতার করা যায়নি। অভিযান অব্যাহত আছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাত-পা বাধা গৃহবধু শিউলি আক্তার পুকুরের পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছেন। এ সময় এক নারীকে বলতে শুনা যায়- ‘ক্যামেরা রেডি অ্যাকশন’। এর এক পর্যায়ে পুকুরের পানি থেকে নির্যাতিত গৃহবধূ ঘাটে উঠতে চাইলে স্বামী রাজন তাকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মারপিট করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজন মিয়া ওরফে রফিকুল ইসলাম নেত্রকোনা সদর উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ঝগড়াকান্দা গ্রামের মৃত লালচাঁন মিয়ার ছেলে।    

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে শিউলি আক্তারের সঙ্গে রফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পঞ্চাশ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। গত রমজানের আগে থেকে স্বামী রাজন আবারও যৌতুক চাইলে গৃহবধূর রিকসাচালক বাবা সাইদুল ইসলাম একটি মোবাইলফোন কিনে দেন জামাইকে।  

কিন্তু রাজন এতে খুশি না হয়ে নগদ আরও বিশ হাজার টাকা ও ঘরের আসবাবপত্র যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী শিউলি আক্তার তা দিতে অস্বীকার করেন। এতে শুরু হয় নির্যাতন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, যৌতুকের জন্য আমাকে বেধড়ক মারধর করে শরীরে মরিচের গুড়া মাখিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। এ সময় আমি পানি চাইলে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পানি দেওয়া হয়।

পরে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় হামাগুড়ি দিয়ে বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে নেমে পড়ি। এ সময় পানি থেকে উঠতে চাইলে আমার স্বামী আমাকে আবারও মারধর করে। আর তখন সেই মারধরের ভিডিও আমার ঝা রুমা আক্তার তার ফোনে ধারণ করে। আমি এ ঘটনায় কঠোর বিচার চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।