ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেফতার

বরিশাল: নিজেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার শ্বশুর পরিচয়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাতৎ করতেন। এমন অভিযোগে বরিশালে রকিব বেপারী (৪৫) নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার রকিব বেপারী বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চরকীর চর এলাকার মৃত করিম বেপারীর ছেলে।

রোববার (২২) মে) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত সুপার (এডিশনাল এসপি) মো. ইকবাল হোছাইন ও গৌরনদী সার্কেলের এডিশনাল এসপি এস এম আল বেরুনী।

তারা জানান, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চরফাতে বাহাদুরপুর এলাকার মাহমুদ হোসাইন (৩২) সম্প্রতি পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে গ্রেফতার রকিব বেপারী ও তার মেয়ের স্বামী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বিপন নগরের ছোটবিঘাটি এলাকার মো. কবির হোসেন পরষ্পরের যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগে মাহামুদ হোসাইন জানান, শ্বশুর ও জামাই  পরষ্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন পদে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।

এভাবে অভিযুক্তরা তিনিসহ গৌরনদীর টরকীর চর এলাকার শাহাবুদ্দিন মোল্লার ছেলে ওসমান মোল্লা (২২), উত্তর রমজানপুর এলাকার দলিল উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে সজীব (২৩) ও আলাউদ্দিন মোল্লার ছেলে মিজান মোল্লাসহ (২৫) একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেই তথ্য যাচাই বাছাই করে  গৌরনদী থানা  পুলিশের একটি চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে প্রতারক রকিব বেপারীকে গ্রেফতার করেছে।

আটকের পর রকিব বেপারী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে সংবাদদাতার উপস্থাপন মতে ভুয়া নিয়োগপত্র, এছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে গ্রেফতার রকিবের টাকা নেওয়ার ভিডিও সংগ্রহ করা হয়।

এ ঘটনায় গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।

ভুক্তভোগী ওসমানের বাবা ও টরকী চর গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, রকিব বেপারী তার ছোট মেয়ের স্বামী কবির হোসেনকে এলাকাবাসীর কাছে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এমনকি সেনাবাহিনীর পোশাক পরে কবির হোসেন তার শ্বশুরালয়ে একাধিকবার এসেছিলেনও।

তিনি বলেন, আমার ছেলে ওসমান মোল্লাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রকিব বেপারী ও তার মেয়ের স্বামী কবির হোসেন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরবর্তীতে ওসমান মোল্লার চাকরি হয়েছে মর্মে সেনাবাহিনীর ভুয়া প্যাডে একটি পরিচয়পত্র দেন তারা।

ভুক্তভোগী সজিব জানান, ছয় মাস আগে তাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকার হাতিয়ে নিয়েছেন রকিব ও কবির। তাকেও সেনাবাহিনীর ভুয়া প্যাডে একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে অভিযোগকারী মাহমুদ হোসেন জানান, তাকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক শ্বশুর-জামাই। পরবর্তীতে তাকে সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র দিয়ে ঢাকায় নিয়ে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের দারোয়ানের চাকরি দেওয়া হয়। এতে তিনি আপত্তি জানানোর পর কবির হোসেন নিজের বাসায় নিয়ে তাকে আটকে রাখেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত তিনদিন আগে লৌহজং থানা পুলিশের হাতে কবির হোসেন আটক হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তারা ওই থানায় গিয়ে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এরপর থেকেই তারা প্রতারণার ফাঁদে পড়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
এমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।