ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশের পেছানোর অন্যতম কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশের পেছানোর অন্যতম কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ঢাকা: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৬২ তম স্থান পেয়েছে। ফলে আগের বছরের তুলনায় আরও ১০ ধাপ পিছিয়েছে।

বাংলাদেশের এত কম স্কোর করার একটি কারণ হল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ডিএসএ। যেটিকে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে 'সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর আইনগুলোর মধ্যে একটি। ' মঙ্গলবার (২৪ মে) ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর ইএমকে সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক- উভয় ক্ষেত্রেই ডিএসএ সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগগুলি পরিষ্কার করেছে। আপনারা সবাই জানেন, এই আইন সাংবাদিকদের ফৌজদারি বিচারের হুমকি দেয় যদি তারা এমন কিছু প্রকাশ করে যা সরকারের কাছে 'মিথ্যা, আপত্তিকর, অবমাননাকর বা মানহানিকর’ বলে মনে হয়।

তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া ও ওটিটি প্লাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন- বিটিআরসির নতুন রেগুলেশনের (বিধিমালা) খসড়া আইন নিয়েও নিয়েও উদ্বিগ্ন। যদিও খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে, আমরা আশঙ্কা করছি যে, এতে এমন বিধান রয়েছে যা সাংবাদিকদের এবং অন্যরা যারা মত প্রকাশ করতে আগ্রহী তাদের ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, সাংবাদিকরা প্রতিদিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও, তারা নির্বাচনে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কিত প্রতিবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ বা যে কোনো দেশে নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি - সে দেশের জনগণের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পরিচালিত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নিজস্ব সরকার বেছে নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।

কিন্তু সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক নির্বাচনের মান কতটা ঠিক? আটলান্টার জর্জিয়া-ভিত্তিক কার্টার সেন্টার, নির্বাচন সংক্রান্ত একটি সুপরিচিত কর্তৃপক্ষ, সারা বিশ্বে ব্যবহৃত নির্বাচনী মান প্রকাশ করে। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্কিত হিসেবে এখানে তাদের মান উল্লেখ রয়েছে-

১. সম্পাদকীয় স্বাধীনতা সুরক্ষিত এবং রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকবে।
২. মিডিয়া সরকারের সমালোচনা করতে পারে।
৩ অসত্য বিবৃতিগুলির পুনরুৎপাদনের জন্য মিডিয়াকে দায়ী করা যায় না।
৪. মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন, জনসাধারণের বিতর্ককে দমিয়ে রাখতে বা সরকারের সমালোচনাকে নিরব করতে গণমাধ্যম ব্যবহৃত হয় না।

৫. সাংবাদিকরা হয়রানি ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

আমি খুব আশা করি যে বাংলাদেশে এই পাঁচটি নীতি নির্বাচনের মৌসুমে এবং তারপরেও বহাল থাকবে।

আমি দুটি চূড়ান্ত বিবৃতি দিয়ে শেষ করতে চাই- প্রথমত, স্বাধীন সংবাদপত্রকে রক্ষা করা এবং সাংবাদিকদের ভয়, হয়রানি বা সেন্সরশিপ ছাড়াই সত্য অনুসন্ধান ও প্রতিবেদন করার অনুমতি দেওয়া আমাদের সবার কর্তব্য।

দ্বিতীয়ত, একটি মুক্ত গণমাধ্যম একটি  মুক্ত গণতন্ত্রের মূল উপাদান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
টিআর/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।