ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বাজেটের ৪০ শতাংশ কৃষি খাতে বরাদ্দের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
বাজেটের ৪০ শতাংশ কৃষি খাতে বরাদ্দের দাবি ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: আসন্ন বাজেটে কৃষি খাতে উন্নয়ন বাজেটের চল্লিশ শতাংশ বরাদ্দ করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট।

বুধবার (১ জুন) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কৃষক-ক্ষেতমজুর-আদিবাসী সমাবেশ, কমিটি পরিচিতি ও স্মারকলিপি পেশ অনুষ্ঠানে এই দাবি করা হয়।


 
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ, বিদ্যুৎসহ সকল কৃষি উপকরণের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ি সার, বীজ, কীটনাশকে ভেজাল দিয়ে মুনাফা লুটছে। কৃষক লাভজনক দাম তো দূরের কথা, ফসলের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছে না। ফলে ক্ষুদ্র কৃষক জমি হারিয়ে ভূমিহীন এবং মাঝারি কৃষক গরীব কৃষকে পরিণত হচ্ছে। খরা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, সরকার উন্নয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশের ঢোল বাজাচ্ছে অথচ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষককে আগাম আবহাওয়া সতর্ক বার্তা দিতে পারছে না। কৃষি সতর্ক বার্তা দিতে না পারা এবং বাধ নির্মাণে দুর্নীতি-দলীয়করণের ফলে ভারত থেকে আসা ঢলে হাওর এলাকায় ফসল ডুবে গিয়ে কৃষক সর্বশান্ত হচ্ছে।

দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্রমিক নেতারা বলেন, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। অথচ ৫/১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বন্যা-খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ায় ফেরৎ দিতে না পারলে কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেফতারি পরোয়না জারি করা হচ্ছে। কৃষক কৃষি উপকরণ কিনতেও ঠকে, ফসল উৎপাদন করে বেচতেও ঠকে।  

সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজের সভাপতিত্বে কর্মসূচি উপস্থিত ছিলেন, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।

তাদের দাবিগুলো হলো-

সার, বীজ, কীটনাশক, বিদ্যুৎ, সেচসহ কৃষি উপকরণের দাম কমানো। উৎপাদন খরচের সঙ্গে ৪০% বাড়তি যুক্ত করে কৃষি ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র চালু করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ফসল ক্রয় করতে হবে।

সহজ শর্তে সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান, ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ সুদসহ মওকুফ; সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিতে হবে। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমাতে হবে।

ক্ষেতমজুরদের সারা বছরের কাজ ও খাদ্যের নিরাপত্তাসহ গ্রাম-শহরের শ্রমজীবীদের আর্মি রেটে রেশন ও ভূমিহীনদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, কর্মসৃজন প্রকল্পসহ সামাজিক নিরাপত্তার গ্রামীণ প্রকল্পে ঘুষ, দুর্নীতি, দলীয়করণ বন্ধ করে প্রকল্প বরাদ্দ ও উপকারভোগীদের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

বন্ধ পাটকল, চিনিকল চালু করা এবং কৃষিভিত্তিক নতুন শিল্প-কারখানা নির্মাণ করতে হবে।  

সকল শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

আদিবাসীদের ভূমির অধিকার নিশ্চিতসহ সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে নদী-খাল-জলাশয় দখল-দূষণ ও বন ধ্বংস বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
এমএমআই/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।