ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সাংবাদিকরা একটা ভয়ের মধ্যে বাস করছেন: মেনন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
সাংবাদিকরা একটা ভয়ের মধ্যে বাস করছেন: মেনন

ঢাকা: ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আমাদের সাংবাদিকরা একটা ভয়ের মধ্যে বাস করছেন। ভয়ের মধ্যে কেন বাস করছেন তারাও জানেন, আমরাও জানি।

ভয় আগেও ছিল। এখন কেন জানি মনে হচ্ছে, সীমা ছাড়িয়ে গেছে। একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এটার অনেকগুলো কারণ আছে।

বুধবার (১ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় পার্টি-জেপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, তবুও সাংবাদিকরা লড়াই করে যাচ্ছেন। প্রথমে লড়াই করেছেন ১৯৬২ সালে। ষাটের দশকের কালাকানুনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছেন সাংবাদিকরা। ’৯০ দশকের অভ্যুত্থানের পরে এ দেশের সাংবাদিকতা জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল। একটা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ খুঁজে পেয়েছিলাম। আমরা সেটাকে ব্যবহার করেছি না অপব্যবহার করেছি, সাংবাদিকরা বলতে পারবেন।

ডিজিটাল আইনের কথা উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছেন, ডিজিটাল আইনে এখন আর সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হবে না। ওই আইনে সাংবাদিককে সংবাদের জন্য গ্রেফতার না করে অন্য ঘটনায় গ্রেফতার করা হলে তখন কী হবে? এই আইন নিয়ে আমরা কতটা সোচ্চার হয়েছি, তাও দেখার প্রয়োজন আছে। এখন আবার এসেছে গণমাধ্যমকর্মী আইন। এসব আইন নিয়ে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের নিয়ে যে ধরনের কথা আশা করেছিলাম, তা পাইনি। খুবই দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঘটনাগুলো ঘটছে। এভাবে যদি সাংবাদিকতা জগত চলে, তাহলে মানিক মিয়া থাকবেন না, তার স্মৃতিও থাকবে না।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মানিক মিয়ার সম্পর্ক ছিল রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। তারা ছিলেন ভাই ভাই। তিনি জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই করে গেছেন। নিজেও জুলুমের শিকার হয়েছেন। এতে রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। আজ দেখি উদ্দেশ্যহীন মিডিয়া। মানিক মিয়ার মিডিয়া কিন্তু উদ্দেশ্যহীন ছিল না। তিনি সত্য বলতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন, তবুও উদ্দেশ্যে অটল ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, লেখনি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সবার সামনে এনেছিলেন মানিক মিয়া। তাকে শুধু সাংবাদিক হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই তা নয়, বরং স্বাধীনতার অন্যতম সহযোগী হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই। তার লেখনির মাধ্যমে স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকদের রাজনৈতিক দর্শন থাকতেই পারে। এখন দেখার বিষয় হলো আমরা সেটাকে পেশার মধ্যে মিলিয়ে ফেলছি কিনা। দুঃখজনক হলো আমাদের রাজনীতিতেও যেমন ধস নেমেছে, সাংবাদিকতায়ও তেমন ধস নেমেছে। মাঝে মাঝে প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচিতে দেখি যতজন বক্তা, ততজন শ্রোতা। বর্তমানের রাজনীতি বুদ্ধিবৃত্তির জায়গা থেকে দূরে সরে গেছে। এখন রাজনীতিবিদরা যা করেন তাই সঠিক মনে করেন। কারও সঙ্গে আলোচনারও প্রয়োজন মনে করেন না।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ বললে যে নামটি আসে সেটি হলো— তফাজ্জল হোসেন মামিক মিয়া। স্বাধীনতার যে আন্দোলন, সেখানে জনমত গঠন করেছিলেন মানিক মিয়া। রাজনৈতিক নেতা না হয়েও তিনি জেল খেটেছেন। বঙ্গবন্ধু যখনই বড় কোনো কাজ করতেন, মানিক মিয়ার সঙ্গে পরামর্শ করতেন। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে মানিক মিয়ার নাম ততদিন থাকবে।

জাতীয় পার্টি-জেপি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ বক্তব্য রাখেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাদেক সিদ্দিকী, এজাজ আহমেদ মুক্তা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২২
এমএমআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।