ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফরিদপুরে সওজের জায়গা উচ্ছেদের পরে ফের বেদখল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
ফরিদপুরে সওজের জায়গা উচ্ছেদের পরে ফের বেদখল

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় সওজের জায়গা উচ্ছেদ করার পরে ফের দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে মেতেছেন প্রভাবশালীরা।

বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এলাকায় দেখা যায় এমন দৃশ্য।

বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সওজের জায়গায় অবৈধ দোকান ঘর করে দীর্ঘদিন ধরেই ভাড়া আদায় করছিলেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা। এ জন্য গত ২ এপ্রিল পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই সড়কের উভয়পাশে থাকা প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সওজ কর্তৃপক্ষ। এতে দখলমুক্ত হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় দুই থেকে আড়াই একর জমি।

তখন দখলকারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা ছিলেন, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদি হুমায়ুন কবির বাবু, রাজবাড়ি খানখানাপুরের মো. আমির হোসেন, ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মো. আহাদুল করিম প্রমুখ।

কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানটি পরিচালনার মাস খানেকের মধ্যে আবারও বেদখল হতে শুরু করেছে সওজের জায়গা। সেই আগের দখলদারদের হাতেই চলে যাচ্ছে উচ্ছেদকৃত জায়গাগুলো। আবার তোলা হচ্ছে আগের মতো দোকান ঘর।

বোয়ালমারী চৌরাস্তা সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু চত্বরের পূর্ব পাশে ফরিদপুরের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম খানের তেল ও গ্যাসের দোকান 'খান ট্রেডার্স' উচ্ছেদের পর আবার অবৈধ দখলে চলে গেছে। মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়কের মোড়ে অবস্থিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল করে ভাড়া দিয়েছেন ছোলনা গ্রামের ইকবাল।

এছাড়া আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার কাছে বটতলা এলাকার আঁধারকোঠার বাসিন্দা সামাদ মৃধা, পংকজ রাজবংশী, চতুলের বাসিন্দা আকরামুজ্জামান মৃধা রুকু, পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত মীর টাইলসের মালিক আবুল বাশার মীর, চৌরাস্তায় আমির হোসেন, শেফা এন্টারপ্রাইজের শরিফুল ইসলাম দখল করা জায়গা উচ্ছেদের পর ফের বেদখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সামনের ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার দোকানঘর এবং চৌরাস্তার আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর ভবনের অংশবিশেষ সরকারি জায়গায় হওয়ায় তা ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সেগুলোও আবারও চলে গেছে সেই মালিকদের দখলে।

দখল হওয়া দোকান ঘরের এক ভাড়াটিয়া পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, উচ্ছেদ করার পরেও সবাই আবার ঘর তুলে আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন। আবার উচ্ছেদ করতে এলে দোকানের মালামাল সরিয়ে নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী কামরুল সিকদার বলেন, উচ্ছেদের কয়েক দিনের মধ্যেই আবারও অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। অবৈধ দখলের এমন মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ লাভলী বেগম বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরে আবারও যারা দখল করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

ফরিদপুর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বাংলানিউজকে জানান, উচ্ছেদ করা জায়গা ফের বেদখল হলে ওই এলাকায় নোটিশ দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করার লক্ষ্য রেখেই আবারও অভিযান চালানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।