ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নীতিমালা ভঙ্গ করে সামাজিক বনায়নের গাছ কর্তন

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
নীতিমালা ভঙ্গ করে সামাজিক বনায়নের গাছ কর্তন

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে মেয়াদের আগেই অর্ধশত গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। বনবিভাগের কোনো অনুমতি না নিয়ে এবং নীতিমালা ভঙ্গ করে কতিপয় উপকারভোগীরা সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অর্ধশত গাছ কর্তন করেন।

 

এ ঘটনায় সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অন্যান্য উপকারভোগীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়।  

সম্প্রতি বনবিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটার সত্যতা পান এবং কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় বনায়নের উপকারভোগী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নূর আহমদ চৌধুরী গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে গত শনিবার রাতে কুলাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বনবিভাগ ও স্থানীয় উপকারভোগী সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে কুলাউড়ার মুরইছড়া বনবিটের আওতাধীন হাজীপুর ইউনিয়নের মনু বাজার থেকে মজমপুর শিকিরজানের পুল, নছরের দোকান থেকে দক্ষিণ ভূঁইগাঁও মসজিদ, নাথ বাড়ি থেকে চানগাঁও মসজিদ এবং হাজীপুরের ত্রিমোহনী থেকে পাবই বটের দিঘী ও পীরের বাজার পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কে আকাশমনি ও বেলজিয়াম প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ রোপণ করে বনায়ন সৃজন করা হয়। ২০১১ সালের ৩০ জুন সামাজিক বনায়নের আওতায় উল্লেখিত সড়কের দুপাশে গাছ রোপণের চুক্তি করা হয়। এ সমিতির আওতায় ২৫ জন উপকারভোগী রয়েছেন। বর্তমানে গাছগুলো অনেক মূল্যবান ও বড় হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি বনবিভাগ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ঝড়ে পড়া ভাঙা ও শুকনো রকমের কয়েকটি গাছ কর্তনের কথা জানান সমিতির কয়েকজন উপকারভোগী। কিন্তু সমিতির সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্য সদস্যদের না জানিয়ে কয়েকটি গাছ কাটার কথা বলে প্রায় অর্ধশত গাছ কেটে নেন স্থানীয় নীতিমালা ভঙ্গকারী কতিপয় উপকারভোগী। কর্তনকৃত গাছগুলোর মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা। গাছের বড় বড় টুকরো রাতের আঁধারে অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অন্য উপকারীভোগীরা জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, সামাজিক বনায়নের বড় বড় গাছগুলো কয়েকদিন আগে দিনের বেলায় কাটতে দেখেছেন। গাছগুলো কাটতে কারও অনুমতি ছিল কিনা তারা তা জানতেন না।

সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী সমিতির সভাপতি ফারুক আহমদ বলেন, এতগুলো গাছ কাটার বিষয়ে সমিতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমি জানি না। সম্প্রতি ঝড়ে পড়া শুকনো কয়েকটি গাছের বিষয়ে বনবিভাগকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল। বনবিভাগ সরেজমিনে এসে গাছগুলো মার্কিং করার কথা ছিল কিন্তু সমিতির কয়েকজন সদস্য বনবিভাগের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে তারা ব্যক্তিগতভাবে গাছগুলো কর্তন করে।  

বনবিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বনবিভাগকে না জানিয়ে এভাবে সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার কোনো নিয়ম নেই। সরেজমিনে গিয়ে ৩২টি গাছ কাটার সত্যতা পেয়েছি। গাছের ৮০ টুকরো কাঠ ইতোমধ্যে জব্দ করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
বিবিবি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।