ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বকেয়া টাকার দাবি পাটকল শ্রমিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
বকেয়া টাকার দাবি পাটকল শ্রমিকদের ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: পাটকল বন্ধের দুই বছর অতিবাহিত হলেও ৫টি জুটমিলের ১১ হাজার শ্রমিক বকেয়া টাকার সমাবেশ করেছে পাটকল শ্রমিকেরা।

২০ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খুলনার পাটকল শ্রমিকেরা তিন দফা দাবিতে এ সমাবেশ করেছে।

শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে- 
•    ৫টি জুটমিলের (খালিশপুর জুটমিল, দৌলতপুর জুটমিল, জাতীয় জুটমিল, আর আর জুটমিল ও কে এফ ডি জুটমিল) সকল বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে 
•    রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে অতিসত্বর চালু করে পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন করতে হবে 
•    নাম জটিলতায় ভুক্তভোগী স্থায়ী-বদলি শ্রমিকদের সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে 
•    সকল শ্রমিকের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাট ও পাট জাতীয় আঁশ ফসল সারা বিশ্বে তুলার পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আঁশ ফসল হিসেবে পরিচিত এবং বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৩-৪ শতাংশ আসে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে। বিশ্বে পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় হলেও পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রথম এবং সবচেয়ে ভালোমানের পাট আমাদের দেশেই উৎপাদিত হয়।  

স্বাধীনতা উত্তর সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে (মোট রপ্তানির ৮৫-৯০  শতাংশ) পাট ও পাটজাত পণ্যের ভূমিকার কারণে পাটকে সোনালী আঁশ বলা হতো। কিন্তু আশির দশক থেকে সিনথেটিক দ্রব্যের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী পাটপণ্যের চাহিদা কমতে থাকে এবং বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়ে। আর এ সময়ে বাংলাদেশে গড়ে ওঠে গার্মেন্টস শিল্প, যার কাঁচামাল থেকে শুরু করে। সমস্ত কিছুই আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে।

কিন্তু বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী পাটপণ্যের চাহিদা ব্যাপকহারে বাড়ার ফলে পাট ও পাটপণ্যের সুদিন ফিরে এসেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি গড়ে উঠতে পারে পাট ও পাট শিল্পকে কেন্দ্র করেই। অথচ সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা না করে, সামগ্রিকভাবে পাট-শিল্পকে বিকশিত করার কোনো পরিকল্পনা হাতে না নিয়ে কেবলমাত্র লসের অজুহাত দেখিয়ে গত বছর ২০২০ সালের ২ জুলাই সরকার একযোগে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে দেয়। যেটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।  

তারা আরও বলেন, যেখানে দরকার ছিল পাটকলের লোকসানের কারণ অনুসন্ধান করে তা দূর করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া, সেখানে সিনথেটিক ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে বন্ধ করে দেওয়া হলো সর্বশেষ ২৫ টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল।  

ফলে কর্মহারা হলেন ৭০ হাজার শ্রমিক, চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে প্রতিটি পাটকল এলাকার স্থানীয় অর্থনীতি-জনজীবন। মৃত নগরীতে পরিণত হলো খুলনা খালিশপুর, ঢাকা লতিফ বাওয়ানি-করিম জুটমিল, চট্টগ্রামের আমিন জুটমিল, সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুটমিলের মতো শিল্প এলাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
এনবি/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।