ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিদ্যুৎ সাশ্রয়: বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর অনুরোধ তথ্যমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
বিদ্যুৎ সাশ্রয়: বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর অনুরোধ তথ্যমন্ত্রীর ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বানের সমালোচনা না করে বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর অনুরোধ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।  

বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা কালে তিনি এ অনুরোধ করেন।

 

মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোও বিদ্যুৎ ব্যবহার সাশ্রয়ী হতে বলছে। আমাদেরও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।  

দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ঘটনায় বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অষ্ট্রেলিয়ায় লাখ লাখ পরিবারকে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য। অষ্ট্রেলিয়াতে কোনো অঙ্গরাজ্যে ১০ ঘণ্টা, কোনোটাতে ১৫ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে- এমন ঘটনা ঘটেছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেখানে কোনো সময় বিদ্যুৎ যায় না সেখানেও নানাভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুতের ব্যাপারে ফ্রান্সে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষকে মিতব্যয়ী হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এগুলো সব উন্নত দেশের কথা বলছি। তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।  

মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। আজকে কোনো ১২-১৩ বছরের ছেলেকে যদি জিজ্ঞেস করেন হারিকেন কাকে বলা হয়, সে বলতে পারবে না। হারিকেন এখন আমাদের ড্রয়িংরুমে সাজিয়ে রাখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ হারিকেনের ব্যবহার নাই। আজ থেকে ১৩-১৪ বছর আগে হারিকেন জ্বালিয়ে অনেকে পড়তে বসতো। আমরা সরকার গঠন করার আগে বিদ্যুৎ সুবিধা পেত বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ। আজকে শতভাগ মানুষের দৌড়গোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। সেটি সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহার করার আহ্বান কোনভাবেই ভুল নয়। আমি যখন রুমে থাকবো না, তখন লাইট অথবা ফ্যান চালু রাখা, সেটি কোনোভাবেই সমীচিন নয়।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন এবং সরকারকে কত টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, সে কথাও বলেছেন। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি যদি ভর্তুকি দিতে হয়, তাহলে পরিস্থিতিটা আপনারা অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন। বিদ্যুৎ খাতে ২৮ হাজার এবং জ্বালানি খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা সরকার গত বছর ভর্তুকি দিয়েছে। এই ভর্তুকি দিয়ে সারাদেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে।  

সমালোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির আমলের কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ দিতে পারেনি তারা আজকে এ ধরনের কথা বলতে পারে না। অনেক দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। যারা সমালোনা করছেন তাদের বলবো পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য। আর অহেতুক সমালোচনা না কারার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, তারা আজকে যেভাবে বড় গলায় কথা বলে, এটি তাদের মুখে মানায় না। পৃথিবীতে জ্বালানির সংকট তৈরি হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে সংকট তৈরি হয়েছে, উন্নত দেশগুলোও সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।

দেশে এমন অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে যেটা বছরের পর বছর বসে টাকা নিচ্ছে, তাহলে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে অপচয়কে কিভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতে যে সিস্টেম লস ছিল আগে, সেটাও একটা অপচয়। সেই অপচয় অনেক কমানো হয়েছে। আগের তুলনায় সিস্টেম লস এখন বাংলাদেশে অনেক কম।

বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে জ্বালানি তেলে দাম এখনো অনেক কম জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে দাম কম হওয়ায় জ্বালানি তেল ভারতে পাচার হওয়ার সব সময় একটা শঙ্কা থাকে। মাঝেমধ্যে হয় না যে, তা নয়। তবে সরকার এবং বিজিবি অত্যন্ত তৎপর।  

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, দেশে বাক স্বাধীনতা নেই, পদ্মা সেতু হাজারটা বানালেও কোনো লাভ হবে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকাল-বিকেল যে বকবক করেন, তাহলে বাক-স্বাধীনতা নাই কোথায়? 

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
জিসিজি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।