ঢাকা : চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (প্রথম ছয় মাস) ৭ হাজার ৪২১ দশমিক ৮ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে বেসরকারি মোবাইলে অপারেটর গ্রামীণফোন। গত বছর একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির রাজস্ব বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে আরও ৯ লাখ নতুন গ্রাহক। ফলে বছরের প্রথমার্ধ শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪৬ লাখ।

মোবাইল অপারেটরটির মোট গ্রাহকের ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ (৪ কোটি ৬২ লাখ) গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করেন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

সোমবার (১৮ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে গ্রামীণফোন। এতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন লিমিটেড নেটওয়ার্ক কভারেজে উন্নয়ন ও বিস্তৃতিতে ৫৬০ দশমিক ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এ প্রান্তিক শেষে কোম্পানির মোট সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৩৯।

চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রতিষ্ঠানটি কর, ভ্যাট, ডিউটি, ফি, ফোরজি লাইসেন্স এবং তরঙ্গ বরাদ্দ ফি বাবদ ৫ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট রাজস্বের ৭৩ দশমিক ১ শতাংশ।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং সময় ছিল। এ সময় দেশের উত্তরাঞ্চলে সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, যা ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে এবং লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে আমরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ ও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য মেডিকেল ক্যাম্প চালু করে ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটির পাশে দাঁড়িয়েছি। পাশাপাশি, আমরা দুর্যোগ কবলিত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য একসাথে কাজ করছি। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় এ প্রান্তিকে সামগ্রিক অবস্থার ওপর বৈশ্বিক মহামারির প্রভাব স্থিতিশীল রয়েছে, যার ফলে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি ও তরঙ্গ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা ধারাবাহিকভাবে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। ২০২২ সালের প্রথমার্ধ শেষে আমাদের মোট ফোরজি সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪০০। নেটওয়ার্ক অভিজ্ঞতার উন্নয়ন ও উদ্ভাবনী পণ্যের কারণে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বছরপ্রতি ৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং সর্বমোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৬ কোটিতে।

আমাদের ফোরজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ দশমিক ১৫ কোটি, যা আগের বছরের তুলনায় ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। গ্রামীণফোন উদ্ভাবন, নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য আমরা অনুমোদিত সর্বোচ্চ পরিমাণ তরঙ্গ অধিগ্রহণ করেছি। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে সেবার মান শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন আরও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে এবং বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনে অবদান রাখবে; পাশাপাশি, শহর ও গ্রামাঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেটের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) ইয়েন্স বেকার বলেন, ২০২২ সালের প্রথমার্ধে রাজস্ব ও ইবিআইটিডি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রয়েছে। প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ হাজার ৪২১ দশমিক ৮ কোটি টাকা ও প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ। এ বছরের প্রথমার্ধে গত বছরের তুলনায় আমাদের সাবক্রিপশন ও ট্র্যাফিক রাজস্ব বেড়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আমাদের পারফরমেন্সের সামগ্রিক উন্নয়নে ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ। বান্ডেলের ব্যবহার গত বছরের চেয়ে ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমার্ধে, সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির কারণে ইবিআইটিডিএ মার্জিন ৬১ দশমিক ১ শতাংশ নিয়ে ইবিআইটিডিএ বৃদ্ধি পেয়েছে বছরপ্রতি ৩ শতাংশ। ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ মার্জিন নিয়ে প্রথমার্ধে কর পরবর্তী মোট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৩০ দশমিক ৫ কোটি টাকা। আমরা আনন্দিত যে, ২০২১ সালের ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় পরিচালনা পর্ষদ আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য শেয়ার প্রতি ১২ দশমিক ৫ টাকা অভ্যন্তরীণ লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছেন।

বাংলাদেশ সময় : ১৪৩৬ ঘণ্টা, ১৮ জুলাই, ২০২২
এমআইএইচ/এমজে