ঢাকা, বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে সুড়ঙ্গ করে বসানো হয়েছে ড্রেজার পাইপ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে সুড়ঙ্গ করে বসানো হয়েছে ড্রেজার পাইপ!

চাঁদপুর: চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসিয়ে গত কয়েক বছর বালু ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন একাধিক ব্যবসায়ী। তারা এতটাই প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাধর যে রেলওয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার পরও পাইপগুলো অপসারণ করছেন না।

 

বরং প্রকাশ্যে শহর ও গ্রাম এলাকার জলাশয় এবং ফসলি জমি ভরাট করছেন। শ্রেণি পরিবর্তন ছাড়া জমি ও জলাশয় ভরাট না করার বিধান থাকলেও ভূমি অফিস থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোনো আইনি ব্যবস্থা। যার ফলে এখন বালু ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে চাঁদপুর সদর।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ ঘুরে দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক রেলপথ সুড়ঙ্গ, সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকা এবং শাহতলী হামানকর্দি এলাকায় ব্রিজের নিচে তিনটি ড্রেজার পাইপ বসানো রয়েছে। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক গুচ্ছ গ্রাম সংলগ্ন সুড়ঙ্গ পাইপটি অন্তত চার বছর আগে বসানো। একবারও উচ্ছেদ হয়নি। সদরের মৈশাদী ও শাহতলীতে একই অবস্থা।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের এসএসএই (পথ) উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর সদরের তিন ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযান কিংবা বাস্তবে কোনো ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত নেয়নি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর আগে চাঁদপুর সদরের মধুরোড স্টেশনের পশ্চিম পাশে সেতুর নিচের ড্রেজার পাইপ লাইনটি উচ্ছেদ করে পাইপগুলো জব্দ করে নিয়ে যান লাকসাম থেকে আসা রেলওয়ের এ পথের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।

সদর উপজেলার শাহতলী, মৈশাদী ও শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার লোকজনই ড্রেজার ও বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। যে কারণে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। মৈশাদী ইউনিয়নের ড্রেজার পাইপ দিয়ে গত কয়েক বছরে কমপক্ষে ২০টি জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট হয়েছে। মহল্লার সড়কে গেলেই ড্রেজার পাইপ দেখা যায়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করে জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করলে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করি। এখন যদি কেউ ভরাট করে থাকেন, আমাদের কাছে তথ্য কিংবা অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ উল্যাহ বাহার বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ থানায় এক বছর কাজ করছি। ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমি থাকা অবস্থায় মামলা হয়নি। আগে হতে পারে, আমার জানা নেই। তবে আমি আসার পর শাহতলীতে একটি উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। এখন যারা ড্রেজার বসিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে রেলের সংশ্লিষ্টরা মামলা করলে আমি ব্যবস্থা নেব।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের দায়িত্বে থাকা কুমিল্লার এসএসএই (পথ) উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, রেলপথের চাঁদপুর অংশে চারটি ড্রেজার পাইপ ছিল। আমি যখন লাকসাম ছিলাম তখন মধুরোড স্টেশন এলাকার একটি ড্রেজার পাইপ উচ্ছেদ করি এবং পাইপগুলো জব্দ করে নিয়ে যাই। এখন আরও তিনটি আছে। এগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন এদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ