ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের চাকরি ছেড়ে জাল টাকা তৈরির চক্রে! 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
পুলিশের চাকরি ছেড়ে জাল টাকা তৈরির চক্রে! 

ঢাকা: রাজধানীতে জাল টাকা তৈরির চক্রের অন্যতম মূলহোতা সাবেক পুলিশ সদস্য মো. হুমায়ুন কবিরকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

এর আগে বুধবার (২৭ জুলাই) দিনগত রাতে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় ডিবি উত্তরা বিভাগের অভিযানে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তার কাছ থেকে ১৬ লাখ জাল টাকা, ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, একটি লেমিনেশন মেশিন, ১টি পেস্টিং গামের কৌটা, ৩টি টাকা তৈরির ডাইস, ২ বান্ডেল ফয়েল পেপার, ২ প্যাকেট টাকা তৈরির কাগজ ও ২টি মোবাইলফোন জব্দ করা হয়।

ডিবি জানায়, হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এসব জাল টাকা চলে যায় ব্যাংকে। যারা ব্যাংকে টাকা লেনদেন করেন তারা ভালোভাবে যাচাই করে নেবেন।

ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এই চক্রটি ব্যাংকে টাকা জমা দিতেন অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে। মূলত ঈদ ও অন্যান্য উৎসব কেন্দ্রীক ব্যাংকে যখন অতিরিক্ত ভিড় হতো সে সময় ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে জাল টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দিতেন।

ব্যাংকের কোন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কতদিন ধরে এই জাল টাকা ব্যাংকে জমা নিয়ে আসছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা হুমায়ুন কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি তিনি কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী এলাকায় চক্রের এজন্টদের কাছে জাল টাকাগুলো সাপ্লাই করতেন। এরপর ব্যাংকে যখন প্রচুর ভিড় হতো তখন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জাল টাকা ব্যাংকে জমা দিতেন। তারা কোন কোন ব্যাংকে জাল টাকা দিয়েছেন, এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। তারা জাল টাকা পাচারও করতেন। তাদের এই পাচারের সত্যতা আছে কি না সেটিও আমরা যাচাই-বাছাই করছি।

হুমায়ুন কবিরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, কোনো এক সময় তিনি পুলিশের চাকরি করতেন। এখন তিনি জাল টাকা তৈরি করছেন। তাই বলে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ছাড় দিচ্ছে না, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। অবৈধভাবে কেউ বড়লোক হতে চাইলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনবো।

হুমায়ুন কবির মোহাম্মদপুরে ভাড়া নেওয়া বাসায় জাল টাকা বানানোর কারখানা হিসেবে ব্যবহার করে জাল টাকা তৈরি করে আসছিলেন। তার অন্যান্য সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন।

তিনি বলেন, তারা মাসে ৬০ লাখ জাল টাকা তৈরি করে। সারা দেশে ৪/৫টা নিয়ন্ত্রণ গ্রুপের মাধ্যমে এই নকল টাকা তারা ছড়িয়ে দিতেন। প্রতি এক লাখ জাল টাকার বিনিময়ে কারখানার মালিক পেতেন ১০ হাজার টাকা।

তারা মূলত ঈদকে টার্গেট করে এই জাল টাকা তৈরি করে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি আসন্ন পূজাকে কেন্দ্র করে মাসে ৬০ লাখ টাকা রোলিং করার টার্গেটে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
পিএম/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।