ঢাকা, রবিবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা

১৭ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
১৭ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি গ্রেফতার

ঢাকা: ঢাকার ধামরাইয়ের সামিনা নামে এক গৃহবধূকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আব্দুর রহিম (৬৪) ও রোকেয়াকে (৫০) গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

সোমবার (২২ আগস্ট) চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানাধীন নারায়ণপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

২০০৫ সালে তারা সাভারের কাউন্দিয়া এলাকায় গৃহবধূ সামিনাকে (১৮) পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

তারা দুইজনেই গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন, পরে জামিনে বের হয়ে পলাতক ছিলেন।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, ২০০৩ সালে রোকেয়ার ছোট ভাই জাফরের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সামিনার। বিয়ের সময় নগদ টাকা, আসবাসপত্র এবং ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী দিলেও যৌতুক হিসেবে আরও টাকা দাবি করেন জাফরের পরিবার। টাকার জন্য সামিনাকে প্রায়ই শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন তারা। টাকা দিতে না পারায় ২০০৫ সালের ৭ জুন সামিনাকে স্বামীর বাড়ির সদস্যরা মারধর করেন। একপর্যায়ে স্বামী জাফর সামিনার আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। আশ-পাশের লোকজন সামিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ জুন সামিনার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের মা। একই বছরের ৩১ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহারনামীয় সব আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণাদি গ্রহণ শেষে ২০১৮ সালের ৫ জুলাই আদালত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।

এ ঘটনার পরেই শুধুমাত্র জাফরের বড় ভাই জাহাঙ্গীর ছাড়া সবাই গ্রেফতার হয়। মামলার মূল অভিযুক্ত আসামি জাফর জেলে রয়েছেন। বড় ভাই সালেক ও মামা ফেলানিয়া মামলা চলাকালীন গ্রেফতার হয়ে এক বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পায় এবং এখন তারা পলাতক রয়েছেন।

সর্বশেষ গ্রেফতারকৃত আব্দুর রহিম ১১ মাস ও রোকেয়া ১৭ মাস কারাভোগের পর ২০০৬ সালের শেষের দিকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। রায়ের সময় শুধুমাত্র ভিকটিমের স্বামী জাফর আদালতে হাজির ছিলেন বাকি আসামি পলাতক ছিলেন। এখন এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও তিনজন আসামি পলাতক রয়েছেন।

ডিআইজি মোজাম্মেল গ্রেফতার দুইজনের বিষয়ে বলেন, তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। ১৯৯২ সালে তাদের বিয়ে হয়। রহিমের রায়ের পর থেকে ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় পেশা পরিবর্তন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তিনি কখনোই এক জায়গায় বসবাস করতেন না।

রোকেয়া ২০১৭ সালে নিজের আইডি কার্ডে বয়স কমিয়ে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নিজেকে অবিবাহিত দেখিয়ে নতুন আইডি কার্ড তৈরি করে গৃহকর্মী হিসেবে কৌশলে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। ৫ বছর ধরে তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। গত জুনের প্রথম দিকে বাংলাদেশে ফেরত আসেন এবং গত ২ মাস ধরে রহিম এবং রোকেয়া তাদের কন্যা পিংকির শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুরের নারায়ণপুর গ্রামে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।