ঢাকা, শনিবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ জুন ২০২৪, ১৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

‘রাশিয়ার তেল কিনলে যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি করবে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
‘রাশিয়ার তেল কিনলে যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি করবে না’

ঢাকা: ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নানামুখী নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনলে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে আপত্তি করবে না বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

বুধবার (৩১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জানান, সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর করে এসেছেন।

সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি হোসে ফার্নান্দেজের সঙ্গে আলাপে তার এই ‘উপলব্ধি’ হয়েছে।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, যুদ্ধের ফলে আমাদের মতো দেশগুলো যে অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে, সেই পরিস্থিতি আমি আন্ডার সেক্রেটারি ফার্নান্দেজের সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরেছি।

তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ যেটা হচ্ছে, সেটা উন্নয়নশীল দেশের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। এটা উচিত হচ্ছে না। আমার মনে হয়েছে, আমেরিকার প্রশাসন এ বিষয়ে অবগত আছে। যুদ্ধের অভিঘাতকে কীভাবে সীমিত করা যায়, তারা সেটা ভাবছে। আমার নিজের ধারণা, এই যুদ্ধের প্রকোপ কমবে।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর অর্জনকে একটা উদাহারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি (ফার্নান্দেজ)। আমি বললাম, উন্নয়নশীল দেশের উদাহরণ যদি হয়, তাহলে তো আমাদের আপানাদের সমর্থন দেওয়া দরকার। আমাদের জ্বালানির দাম বেড়ে আকাশচুম্বি হয়ে গেছে। এটা কেনার ক্ষমতা আমাদের নেই।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, তখন কথায় কথায় ফার্নান্দেজ বললেন, ফার্টিলাইজার, ফুড ও তেলের ওপর কোনো স্যাংশন নেই। আমি তখন সরাসরি প্রশ্ন করলাম, তাহলে আমরা কি অন্য জায়গা (রাশিয়া) থেকে ডিজেল আনতে পারব? কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দিলেন না। হ্যাঁ বললেন না, না-ও বললেন না। আমি সাধারণ মানুষ। আমি এটাকে হ্যাঁ ধরে নিয়েছি। এখন ডিপ্লোম্যাটরা বিস্তারিত বলতে পারবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিভিন্নভাবে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ইউরোপীয় জোটের শরিকরা। বেশ কিছু পাল্টা নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে রাশিয়া।

যুদ্ধ, পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার ফলে সারা বিশ্বে সার, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও খাবারের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। সংকটময় বৈশ্বিক এ পরিস্থিতিতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ।

রাশিয়ার ওপর সুইফটের নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম পরিশোধ সম্ভব না। রাশিয়া থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে দাম পরিশোধের এ জটিলতা সমাধানে বিকল্প উপায় খুঁজতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

তেল আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকি কমাতে এবং ডলার বাঁচাতে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে। সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি একটি আন্তর্জাতিক ঘটনা হলেও আমাদের দেশের কিছু মানুষ এটাকে বাংলাদেশের সমস্যা হিসাবে উপস্থাপন করছে। এটা আমাদের এত বড় অর্জনকে আন্ডারমাইন করছে।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিনিয়োগ করতে চায় বলেও জানান তৌফিক-ই-ইলাহী। তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন-ডিএফসির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।