ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ঘর পেলেন অসহায় চম্পা

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ঘর পেলেন অসহায় চম্পা

ফরিদপুর: ‘আমার দুইডা মেইয়ে। বিয়ে দেবার পর একরাত বাড়ি অ্যাইসা আমার সাতে থাকতি পারে না।

এই ভাত খেইয়ে ওই অমুকের বাড়ি তমুকের বাড়ি থাকতি হইছে। আইজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদ্দলতে আমার বাজান আমারে ঘর কইরে দিছে। আমি আমার মেইয়ে দুইডা নিয়ে থাকতি পারব। ’ 

কাঁদতে কাঁদতে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন জীবন যুদ্ধে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া চম্পা বেগম।  

তার বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া এলাকায়। স্বামীকে হারিয়েছেন অনেক আগেই। নেই কোনো ছেলে সন্তান। দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের আবার সংসার ভেঙেছে দু’বছর আগে। ইটভাঙা আর মাটি কেটে আয়ের সংসারে তাকেও নিতে হচ্ছে বয়ে।

বাবা মারা যাওয়ার সময় যে কয়েক শতক জমি রেখে যান, তা হয়েছে কয়েক ভাগ। চম্পার কপালে দুই শতাংশও জুটেনি। তারই মাঝে ছন, অন্যের বাড়ি থেকে কুঁড়িয়ে আনা টিন এবং পাটকাঠি দিয়ে তৈরি তার ঝুঁপড়ি ঘর। ঝরে ভেঙেছে কয়েকবার। বৃষ্টির পানি তো নিত্যকার চালচিত্র। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে ভাগ্য ফিরেছে চম্পার।  

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে তার জন্য একটি নতুন টিনের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে ছাত্রলীগের সমাজসেবা সেল। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে জামাই মেয়েকে নিয়ে একই চালের নিচে রাত কাটানোর আনন্দে আত্মহারা চম্পা!

ধন্যবাদ জানিয়েছেন ছাত্রলীগকে, প্রাণ ভরে দোয়া করেছেন প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ুর জন্য।  

চম্পার ছোট মেয়ে (যৌতুকের কারণে সংসার ভেঙেছে) হালিমা জানান, আমার দুর্ঘটনার পর আমি আমার মায়ের কাছে ফিরে আসি। এরপর নতুন করে আমাকে কলেজে ভর্তি করে দেন ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শাহেদ ভাই। কলেজের অন্যান্য ফিও তারাই দিচ্ছেন। একেবারে ছোট বেলা থেকে আমাদের থাকার মতো কোনো ঘর ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে তারা আমাদের এই সুন্দর ঘরটি করে দিয়েছেন। আমরা এখন খুব খুশি। আমরা ছাত্রলীগকে মন থেকে ধন্যবাদ জানাই।

এ বিষয় ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শেখ স্বাধীন শাহেদ বাংলানিউজকে জানান, বর্তমান সময়ে একজন ছাত্রনেতার পক্ষে একটা ঘর নির্মাণ সহজ কাজ নয়। গত ৬-৭ মাস ধরে আমি চেষ্টা করছি কোনো মাসে একটি খুঁটি, কোনো মাসে দুটি টিন, কোনো মাসে মিস্ত্রির খরচ জুগিয়ে কাজটা সম্পন্ন করতে। শেষের দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন এবং ‘সাজিদ-সোবহান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ নামে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি সংগঠন এ কাজে  সহায়তা করেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে একটি ভালো কাজ করতে পেরে ভীষণ তৃপ্ত।  

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার জানান, হতদরিদ্র চম্পা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি ঘরের ব্যবস্থা করি। কিন্তু তার বাড়িতে কোনো পুরুষ অভিভাবক না থাকায় নিজের এলাকা ছেড়ে অপরিচিত একটা স্থানে যেতে তিনি অপারগ ছিলেন। অন্যদিকে তার দুই শতক জমি না থাকায় তাকে তার জায়গায় ঘর নির্মাণ করে দেওয়াও সম্ভবপর ছিল না। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যখন তাকে ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, আমরা তাতে সহায়তা করেছি। ছাত্রলীগের এমন যেকোনো ভালো উদ্যোগে আমরা পাশে থাকব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।