ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পোশাক শ্রমিকদের ৭ দাবিতে সমাবেশ, স্মারকলিপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২২
পোশাক শ্রমিকদের ৭ দাবিতে সমাবেশ, স্মারকলিপি

ঢাকা: অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, ৬০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতাসহ ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিজিএমইএ-তে স্মারকলিপি দিয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের নেতারা।

রোববার (৬ নভেম্বর) বেলা ১২টায় উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিজিএমইএ ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ শেষে নেতৃবৃন্দ বিজিএমইএর অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম এবং মনসুর খালেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি দেন এবং মজুরি বৃদ্ধির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেন।

সমাবেশে অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়কারী শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজের সভাপতিত্বে রাজু আহমেদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, তাসলিমা আখতার, মাসুদ রেজা, শবনম হাফিজ, বিপ্লব ভট্টাচার্য প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ সমাবেশে এবং বিজিএমইএ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে মজুরি বৃদ্ধির প্রাসঙ্গিকতা ও জরুরত নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, দেশের রপ্তানি আয়ের সর্বোচ্চ খাত তৈরি পোশাক শিল্প। এই শিল্প ৪০ লাখ শ্রমিকের রক্ত ঘামে টিকে আছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে শ্রমিকের জীবনে এক চরম সংকট নেমে এসেছে। খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির লাগামছাড়া পরিস্থিতিতে শ্রমিকের ৮ হাজার টাকা বেতনে জীবন চলা দায় হয়ে পড়েছে।



নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন ও ২৫ হাজার টাকা মজুরি করার দাবি জানান। তারা বলেন, ২০১৮ সালে নতুন মজুরি ঘোষণার সময় থেকে বর্তমানে গত ৪ বছরে চাল ১৭% , ডাল ৯৬%, আটা ৭২%, তেল (বোতল) ৭৮%, লবণ ৪০% এবং ডিমের দাম ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। একজন শ্রমিক যদি তার পরিবারের জন্য প্রায় ২০০ টাকা দরে ৫ লিটার তেল কেনেন তাহলে তার মোট মজুরি ৮ হাজার টাকার মধ্যে ১০০০ টাকাই কেবল তেল কেনার খরচেই শেষ হয়ে যায়। তাই শ্রমিক পরিবারগুলো বর্তমানে তেল কেনার পরিমাণ কমিয়ে ফেলেছে। মাসে যদি আগে লাগতো ৫ লিটার সেখানে শ্রমিকরা এখন ৩ লিটার বা তারও কম তেল কিনছে। শ্রমিকরা বর্তমানে ৮ হাজার টাকা বেতন নিয়ে এক অচল অবস্থায় পড়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যের বরাত দিয়ে শ্রমিন নেতারা বলেন, করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে পোশাকখাত ঘুরে দাঁড়াবার খবর পত্রিকার পাতায় এসেছে ফলাও করে বছরের প্রথম ৬ মাসে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তথ্যও অনুযায়ী ২ অক্টোবর এবং ৫ অক্টোবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং ইউএনবি জানাচ্ছে  বাংলাদেশে সামগ্রিক রপ্তানিতে পতন হলেও আয় বেড়েছে তৈরি পোশাকখাতে। সামগ্রিকভাবে অক্টোবর মাসে সরকারের রপ্তানি আয় কমলেও পোশাকখাতে প্রবৃদ্ধি ৩%। অক্টোবরে পোশাকখাতের রপ্তানি আয় ৩.৬৭ বিলিয়ন ডলার (৩৬৭ কোটি ডলার), যা ২০২১-২২ অর্থবছরের অক্টোবরে ছিল ৩.৬৫ (৩৬৫ কোটি ডলার) বিলিয়ন ডলার। প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথম ৪ মাসে রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে ৮৩ শতাংশই তৈরি পোশাক।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি সামগ্রিক অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করলেও পোশাকখাত সেটা সামলে তাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখছে। এই পরিস্থিতি শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি না করলে শ্রমিক এবং শিল্প দুই বিপর্যস্থ হবে।

মজুরি বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের মহার্ঘভাতা ও রেশনিংয়ের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন এবং ২৫ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণের উদ্যোগসহ ৭ দফা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে আহবান জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২২
পিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।