ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব এসডিজির অর্থায়নের চাবিকাঠি

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব এসডিজির অর্থায়নের চাবিকাঠি

ঢাকা: বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের প্রভাবক হিসেবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ওপর জোর দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের এসডিজি অর্থায়ন নীতিতে বেসরকারি খাতকে অর্থায়নের মূল উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত একটি জাতীয় স্তরের কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে এসডিজি অর্জনের গতি অব্যাহত রাখার জন্য অর্থায়ন একটি মূল দিক। সরকার তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের ওপর জোর দিলেও, এসডিজি অর্জনে সরকারের সম্পদ যাতে সর্বোত্তম ফলাফল আনতে পারে তা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।  

সরকার ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে ‘এসডিজি স্থানীয়করণ: অনুসন্ধান এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে। দেশের নয়টি পিছিয়ে থাকা জেলা সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নাটোর, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, শেরপুর ও ফেনীতে এসডিজি স্থানীয়করণ প্রচেষ্টার ফলাফল জানানোর লক্ষ্যে।
 
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ বলেন, এ ধরনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, আমরা জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছি যাতে বাংলাদেশের আটটি বিভাগ থেকে নয়টি পিছিয়ে থাকা জেলার কমপক্ষে একটি জেলায় এ পদ্ধতির পাইলট এবং পন্থা নির্ধারণ করা যায়। যদিও এটি একটি ভালো উদ্যোগ, আমাদের লক্ষ্য হলো এটিকে দেশব্যাপী প্রসারিত করা। এজন্য, আমরা কেবল উন্নয়ন সহযোগীদেরই নয়, বেসরকারি খাত এবং সুশীল সমাজকেও তাদের সম্পদ, জ্ঞান এবং সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসতে বলি।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, বাংলাদেশ সরকার এসডিজি স্থানীয়করণের ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। দেশটি ৩৯+১ জাতীয় অগ্রাধিকার সূচক চিহ্নিত করেছে এবং বিভিন্ন স্তরে এসডিজিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য কাঠামো নির্ধারণের দিকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখনও, দেশটিকে এসডিজি অর্জনে আরও এগিয়ে যেতে হবে- আমি বিশ্বাস করি এ পাইলট উদ্যোগটি একটি ভালো শুরু, তবে আমাদের স্কেল আপের জন্যও প্রচেষ্টা করতে হবে।
 
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, এসডিজি অর্জনের জন্য জাতীয় ও স্থানীয় উভয় পর্যায়েই একটি গুরুত্বপূর্ণ তহবিল সংকট রয়েছে। ২০১৭ সালের একটি অনুমান দেখায় যে শুধুমাত্র বাংলাদেশে অতিরিক্ত ৯২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। তাই, স্থানীয় অগ্রাধিকারের জন্য ও এ ব্যবধান পূরণ করার জন্য কীভাবে নতুন অর্থায়নের উপকরণ এবং নতুন অর্থায়নের পথ তৈরি করা যায় সে সম্পর্কে আমাদের ভাবতে হবে এবং কাজ করতে হবে। স্থানীয় অগ্রাধিকারের জন্য তহবিল কীভাবে বরাদ্দ, সমন্বয়, ব্যয় এবং আরও কার্যকর উপায়ে প্রতিবেদন করা যায় তার উদ্ভাবনী সমাধানগুলোও আমাদের গবেষণা করতে হবে।  

সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, সুইডেন গণতান্ত্রিক শাসনের একটি শক্তিশালী প্রবর্তক এবং আমরা এ প্রক্রিয়ার একটি উন্নয়ন অংশ হতে পেরে আনন্দিত। এটি বেশ সুস্পষ্ট, স্থানীয় সম্পৃক্ততার সঙ্গে আপনি এমন একটি সমাধান তৈরি করার সম্ভাবনা অনেক বেশি যা স্থানীয় সমস্যার জন্য উপযুক্ত হবে। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই। এ দেশের স্থানীয় অংশগ্রহণের একটি খুব সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে এবং এখন আমি অনুমান করি যে স্থানীয় নাগরিকরা এখানে জড়িত এবং তারা ফলাফলগুলো অনুসরণ করতে খুব আগ্রহী।  

এসডিজি স্থানীয়করণ অনুশীলনে শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, দুর্যোগ, আইন-শৃঙ্খলা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও খাদ্য, অর্থনৈতিক সমস্যা, যোগাযোগ ও সড়ক, বিদ্যুৎ-শক্তি, পর্যটন এবং শহুরে খাতসহ মোট ১৩টি খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক যুগ্ম সচিব মো. মনিরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা এবং ইউএনডিপির সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম আসাদুজ্জামান এসডিজি স্থানীয়করণ অনুশীলনের বিভিন্ন ফলাফল তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।