ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জঙ্গি গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলগুলো অপতৎপরতা চালাচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২২
জঙ্গি গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলগুলো অপতৎপরতা চালাচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী

ঢাকা: ধর্মের নামে কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা বিঘ্ন ঘটনা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন,দেশে যদি অর্থনৈতিক উন্নয়ন না হয় তাহলে সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।  

শনিবার (১২ নভেম্বর) সকালে নটরডেম কলেজে কারিতাসের জাতীয় পর্যায়ে সূবর্ণজয়ন্তী বর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে সকাল ৯টায় এক আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর জাতীয় পতাকা ও কারিতাস পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন সহকারে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উন্মুক্তকরণ, স্টল উদ্বোধন, অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান, কারিতাস পদক প্রদান, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী ও বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সম্পন্ন হয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কারিতাস একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে গত ৫০ বছর ধরে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি মানবতা, ধর্ম,বর্ণ, ভূপ্রকৃতি সব কিছু ছাড়িয়ে সকল মানুষের জন্য কাজ করছে এবং করবে। একাত্তরের যুদ্ধের পর দেশ গঠনে কারিতাসের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ দারিদ্র বিমোচনে অসাধারণ অগ্রসর হয়েছে। বাংলাদেশ আর এখন পরনির্ভরশীল নয়।  

তিনি বলেন, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে। এই মুক্তিযুদ্ধের মূলচেতনা ও মূলদর্শন হলো একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে আইনের শাসনের একটি সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার। যে সমাজে বা রাষ্ট্রে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার থাকবে। সকল মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করবো। কারিতাস স্বাধীনার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে কাজ শুরু করে। কিন্তু দুঃখের বিষয ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে অপশক্তি, অসাংবিধানিক শক্তি দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনা করে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। যে ধারায় পাকিস্তান চলত সে ধারায় দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে আমরা এখন সংগ্রাম লড়াই করছি, এই আন্দোলন এখনও শেষ হয়নি।  

তিনি বলেন,অর্থনৈতিক সামাজিক সকল উন্নয়ন বিশ্বের কাছে সুনাম কুড়িয়েছে। বাংলাদেশ দারিদ্র্যতাকে ৫৬ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে আনতে পেরেছে।

কারিতাস কর্মীদের সকল মানুষের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন দেশে কথা বলার স্বাধীনতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, ধর্মের স্বাধীনতা ও মানবতার কথা বলছি। তখন দেশে ধর্মের নামে কিছু ধর্মান্ধ, জঙ্গি গোষ্ঠী, কিছু রাজৈনতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার শুরু করে। আমরা তাদের ঘৃণা করি।  

তিনি বলেন, এখন কিছুদিন যাবৎ দেখছি দেশে কিছু বড় রাজনৈতিক দল হুমকি দিচ্ছে তারা আন্দোলন করবে, সংগ্রাম করবে। যার মাধ্যমে দেশে একটি রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আর নির্বাচিত সরকার হিসেবে সরকারের দায়িত্ব দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। সরকার সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ করছে।  

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালে দেশে জাতীয় নির্বাচন। আমি আশা করি বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। সেখানে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে।  

দেশকে এগিয়ে নিতে অর্থনেতিক উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কারিতাস শুধু আর্থ-সামাজিকভাবে কাজ করে নাই, অবকাঠামো উন্নয়নেও কাজ করেছে। কারিতাস সফল একটি এনজিও৷ আমি আশা করি কারিতাস আগামীতে সকল মানুষের জন্য পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবে।  


বিশেষ অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংসদ সদস্য মো. আশরাফ আলী খান বলেন, দেশজুড়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে কারিতাস অনন্য দক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কারিতাসকে অভিনন্দন ও কারিতাস বাংলাদেশের সকল দাতাবন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই।  

কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট খুলনার বিশপ জেমস্ রমেন বৈরাগী বলেন, কারিতাস, বাংলাদেশ ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের একটি অপরিহার্য অংশ। কারিতাস তার জন্মলগ্ন থেকেই মানুষের সেবা ও ভালোবাসা দেওয়ার মূলমন্ত্রকে মাথায় রেখেই পথ চলছে। যদি ফিরে দেখি, গত ৫০ বছরে সংগঠন হিসেবে কারিতাসের সেবা, কাজের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে, কার্যক্রমের ধরন পরিবর্তন হয়েছে, কাজের গুণগত মানে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে, অনেক মানুষ সেবার আওতায় এসেছে এসব বিষয়গুলো যেমন সাফল্যের মাপকাঠি ঠিক তেমনিভাবে আমাদের ক্রমবর্ধমান অসমতার বিষয়টি সামনে তুলে আনে। আমাদের পরিকল্পিত সার্বিক মানব উন্নয়নে আরও বেশি যত্নবান হতে হবে।

অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং, আরমা দত্ত, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, মন্সিনিয়র মেরিনকো অ্যান্তলোডিক, নিতাই চন্দ্র দে, তপন কুমার বিশ্বাস, ক্যাফড, জ্যাকুলিন ডি বরগোয়িং ও রাশেদা কে চৌধুরী ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২২
জিসিজি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।