ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

ভার্জিনিয়ায় বাঙালি সংগঠন 'প্রিয় বাংলা'র বিশেষ স্বীকৃতি অর্জন

বাবুল ডি' নকরেক, ভার্জিনিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৪
ভার্জিনিয়ায় বাঙালি সংগঠন 'প্রিয় বাংলা'র বিশেষ স্বীকৃতি অর্জন

ভার্জিনিয়া (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র): যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালি কমিউনিটিতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশের তরুণদের সংগঠন 'প্রিয় বাংলা'-কে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে কমনওয়েলথ অব ভার্জিনিয়া।

এ স্বীকৃতি 'প্রিয় বাংলা' পরিবারের সবাইকে যেমন আনন্দে উদ্বেলিত করেছে, তেমনি অনুপ্রাণিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকেও।



কমনওয়েলথ অব ভার্জিনিয়ার প্রধান টেরেন্স আর. ম্যাকঅওলিফ  স্বীকৃতি সনদে উল্লেখ করেন, কমনওয়েলথ অব ভার্জিনিয়া ‘প্রিয় বাংলা’ পথমেলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভার্জিনিয়ার ‘বাঙালি উৎসব’ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

সনদে যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছেন ভার্জিনিয়ার গভর্নর এবং সেক্রেটারি অব কমনওয়েলথের লেভার স্টোনে।

স্বীকৃতি সনদে পথমেলাকে 'সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে' এক অসামান্য অবদান উল্লেখ করে ভার্জিনিয়ার সব শ্রেণীর মানুষকে ‘পথমেলা’য় সক্রিয় অংশগ্রহণ করে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে মিলিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

‘প্রিয় বাংলা’র এই 'বাঙালি উৎসব' ভার্জিনিয়ার বাঙালি-আমেরিকান কমিউনিটির জন্য একটি বৃহৎ পরিসরের সুবর্ণ সুযোগ। এর সক্রিয় কার্যক্রম এবং অবদান ভার্জিনিয়ার অর্থনীতিকেও আরো সমৃদ্ধ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

‘প্রিয় বাংলা’র অন্যতম সংগঠক, বোর্ড অব ডিরেক্টর, প্রিয়লাল কর্মকার বলেন, ‘প্রিয় বাংলার এই অর্জনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আমাদের জানা মতে, এই প্রথম আমেরিকার কোনো রাজ্য প্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের রাজ্যের জন্য 'বাঙালি উৎসব' নামে কোনো ‘পথমেলা’কে স্বীকৃতি দিলেন।

তিনি বলেন, এই অর্জন শুধু প্রিয় বাংলার নয়। এটি আমাদের সব বাঙালি জাতির জন্য একটি বড় পাওয়া। আমাদের ভালো কাজের স্বীকৃতি আমরা প্রতি বছরই পাচ্ছি। এগুলো সবই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে পাচ্ছি।

প্রিয়লাল বলেন, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভালো কাজের এ অর্জন। এই অর্জন সব বাংলাদেশি মানুষের।

‘প্রিয় বাংলা’র আরেক সংগঠক ও বোর্ড অব ডিরেক্টর, জীবক বড়ুয়া বলেন, যে কোনো ভালো কাজের স্বীকৃতি অবশ্যই সবাইকে উজ্জ্বীবিত করে। কাজ করার আরো প্রেরণা যোগায়।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় কথা বলার চেয়ে কাজে বিশ্বাসী। ‘প্রিয়বাংলা’ তাই এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নীরবে, নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে এমন আরো স্বীকৃতি এবং সম্মাননা পেয়েছি। এগুলো পেলে অবশ্যই ভালোলাগে। তবে স্বীকৃতি বা সম্মাননার জন্য আমরা কাজ করি না।

প্রিয় বাংলার সংগঠক, বোর্ড অব ডিরেক্টর শিবলী সিরাজ বলেন, এই অর্জন ভার্জিনিয়ায় বাঙালিদের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সম্মান এনে দিলো।

তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই স্বীকৃতি প্রমাণ করছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী সব বাঙালির নেতৃত্বে আছে ভার্জিনিয়া।

উল্লেখ্য, কমনওয়েলথ অব ভার্জিনিয়া প্রধানের কাছ থেকে এই বিরল স্বীকৃতি অর্জন অত্যন্ত মর্যাদার। ‘প্রিয় বাংলা’-ই প্রথম বাংলাদেশি সংগঠন এমন বিরল স্বীকৃতি অর্জন করলো। এর আগে আর কোনো সংগঠনের কোনো মেলাকে কোনো রাজ্যের জন্য ‘বাংলা উৎসব’ বলে স্বীকৃতি দেয়নি।

এটি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য গর্ব করার মতো একটি অর্জন এবং বাঙালি জাতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরেক ধাপ এগিয়েই নিলো।

আর্লিংটন কাউন্টির সহযোগিতায় ‘প্রিয় বাংলা’ গত দু’বছর এই মেলা পরিচালনা করার তৃতীয় বছরের মাথায় ভার্জিনিয়া রাজ্যের একটি স্বীকৃত মেলায় পরিণত হলো।

'প্রিয় বাংলা' সংগঠন এর কার্যক্রম শুরু করার এক বছর না পার করতেই জয় করে নিয়েছিল 'US Congressional Award 2013'-সহ আরো একাধিক সম্মাননা এবং স্বীকৃতি।

আরেকজন ডিরেক্টর ফারহানা হানিফ তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘প্রিয় বাংলা’ মেলা, আমাদের প্রাণের বাংলা মেলা এখন ভার্জিনিয়া স্টেট স্বীকৃত বাঙালি মেলা, ভাবতেই ভালো লাগে।

ভার্জিনিয়া রাজ্যের এমন একটি বিরল স্বীকৃতি পেয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ‘প্রিয় বাংলার অন্যান্য ডিরেক্টর মৌসুমী ফাতেমা সিরাজ, পুলি কর্মকার, আমিরুল ইসলাম রমি, নুপুর চৌধুরী, ডেমিয়ান ডিয়াজ, প্যাট্রিক গোমেজ, জাহিদ রাসেল, রুম্পা বড়ুয়া, খালেদ চৌধুরী, রতন বড়ুয়া, সেলিম আকতার, বাণীব্রত ঘোষ, সুমি বড়ুয়া, নাবিয়া হাসান বৃষ্টি, দীপ্তি বড়ুয়া, মিতালী গোমেজ এবং পিযুষ বড়ুয়াসহ ‘প্রিয় বাংলা’র সব সহযোগী ও অনুরাগী জানান, তাদের সময় এবং শ্রমের যথার্থ সম্মান এবং স্বীকৃতি পেয়ে তারা খুব আনন্দিত ও আবেগাপ্লুত।  

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সব বাংলাদেশিদের ঐক্যবদ্ধ করে, তাদের সার্বিক সেবা দেওয়াই ‘প্রিয় বাংলা’ সংগঠনের লক্ষ্য। গত দুই বছরে এই সংগঠন যে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে, সেগুলো হচ্ছে, আমেরিকা ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেবাদান, ইংরেজি শিক্ষা কোর্স, নাগরিকত্ব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি কোর্স, অভিবাসন আইনি পরামর্শ, ছাত্রবৃত্তি ও ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম, সিনিয়র সিটিজেন অ্যান্ড ইউএস ভেটারান ডিজাবিলিটি বেনেফিটস পরামর্শ প্রদান, ইউএস মিলিটারি ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস, মেডিকেল অ্যান্ড ফ্রি ক্লিনিক অ্যাডভাইস লাইন, প্রফেশনাল ডেভেল্পমেন্ট অ্যান্ড গাইডেন্স প্রভৃতি।

এ ছাড়াও ‘প্রিয় বাংলা’ বিনামূল্যে দন্ত চিকিত্সা সেবা প্রকল্প এবং প্রেসক্রিপশন ডিসকাউন্ট কার্ড প্রকল্প ইতোমধ্যে বেশ প্রশংসা অর্জন করেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ