ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নিউইয়র্ক

সহিংসতা, বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্ক

শিহাবউদ্দীন কিসলু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৪
সহিংসতা, বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্ক

নিউইয়র্ক: বিক্ষোভে আবারো উত্তাল হয়েছে নিউইয়র্ক। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।

প্রতীকী ‘কালো কফিন’ নিয়ে মিছিল করেছে বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ পুলিশের গুলিতে নিহতদের নাম লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেছেন। গ্রেফতার হয়েছে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভে প্রতিদিনই বাড়ছে লোকসংখ্যা।

পুলিশের গ্রেফতার অভিযানে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক এরিক গার্নার মামলায় গ্রান্ড জুরি’র রায়ের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সড়ক, ব্রিজ ট্যানেল অবরোধ অব্যাহত রেখেছে। বিক্ষোভকারীদেরকে গ্রেফতার এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, নিউইয়র্ক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অব ট্রেনিং মাইকেল জুলিয়ান পুলিশ সদস্যদের ৩ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ঘোষণায় বলেছেন, ‘পুলিশকে আরো মানবিক হতে হবে। ’

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ব্লাজিও এ সময় ৩৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটের পুলিশের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এও বলেন, ‘এতদিন আমি আমার ছেলে ডন্টে’র সঙ্গে কোনো আলোচনা করতাম না। কিন্তু এখন তাকে সতর্ক করছি । ’

বিল ব্লাজিও’র স্ত্রী একজন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান এবং তাদের ছেলে ডন্টে মিশ্র মাতৃবর্ণ পেয়েছে।
 
বৃহস্পতিবার পুলিশের হেলিকপ্টার টহল মাথায় নিয়েই ডাউনটাউনের ফোলি স্কয়ার থেকে বিক্ষোভ শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। ‘নো জাস্টিস, নো পিস, নো রেসিস্ট পুলিস’ প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয় নিউইয়র্কের ম্যানহাটন।

গত ২০১২ সালে ব্রংকসের নিজ বাসায় পুলিশের গুলিতে নিহত রামারলে গ্রাহামের (১৮) বাবাও ফেলি স্কায়ারের বিক্ষোভে যোগ দেন। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, নিউইয়র্ক পুলিশ এবং ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি আমাদের সবাইকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।
 
বিক্ষোভকারীরা ব্রুকলিন ব্রিজ পার হয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাশে পৌঁছে স্লোগান দিতে থাকে, ‘রাজপথ কাদের? রাজপথ আমাদের। ’ বিক্ষোভের একটি অংশ হল্যান্ড ট্যানেল অভিমুখে যায় এবং স্লোগান দিতে থাকে ‘আই ক্যান্ট ব্রিথ, হ্যান্ডস আপ, ডোন্ট শুট। ’

একজন ট্যাক্সিচালক জানালায় মাথা গলিয়ে ফরাসি উচ্চারণে চিৎকার করে বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনেরও মূল্য আছে। ’ বিক্ষোভকারীরা তার উত্তরে বলেন, ‘যদি আমরা ন্যায়বিচার না পাই, তোমরাও শান্তি পাবে না। ’

এ সময় মোটরসাইকেলে টহলদার পুলিশের উদ্দেশে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেয়, ‘কাদেরকে নিরাপত্তা দিচ্ছ? গাড়ি থামাও। ’

একপর্যায়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও ভিডিও করার সময় পুলিশ লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে বলে অভিযোগ করেন এক নারী।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে।

যুক্তরাষ্ট্রে বড় দিনের ছুটির প্রাক্কালে নিউইয়র্ক জুড়ে ব্যাপক যানজটের মধ্যেও চালকরা হর্ন বাজিয়ে এ বিক্ষোভের প্রতি তাদের সংহতি প্রকাশ করেন।

এদিকে নিউইয়র্ক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অব ট্রেনিং মাইকেল জুলিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে ‘মৌলিক নীতি, কৌশল এবং পুলিশি দক্ষতাকে’ সামনে রেখে ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যাখ্যা করেন।

নিউইয়র্ক পুলিশের ইতিহাসে এমন প্রশিক্ষণ এই প্রথম। মাইকেল জুলিয়ান বলেন, আমাদেরকে আরো মানবিক হতে হবে।

‘ম্যাসিজমো’কে বর্ণবাদের চেয়েও বড় সমস্যা উল্লেখ করে জুলিয়ান বলেন, পুলিশকে ইগো, ক্ষমতার অপব্যবহার পরিহার করতে হবে।
পুলিশ কমিশনার বিল ব্রাটন বলেন, তার ডিপার্টমেন্টে বর্ণবাদের স্থান নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ