১.
আদিত্য আরাফাত বাংলানিউজে যোগ দেওয়ার দিন কয়েক পরের ঘটনা। ফেনীতে একজন স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিকের কাছে জানতে পারলাম আরাফাত বাংলানিউজে যোগ দিয়েছেন।
সম্ভবত আমি ফেনী যাওয়ার দু’দিন আগে আরাফাতও ফেনী ঘুরে এসেছেন। সেই সিনিয়র সাংবাদিককে বললাম- ভালোই তো। তিনি বললেন- ধুর মিয়া! সারা জীবন এইসব অনলাইনে কাজ করে কোন ফায়দা আছে! কয়জন লোকে ওগুলা পড়ে!
আমি হাসতে হাসতে বেরিয়ে এসেছিলাম। কিছুই বলিনি। বলিনি কারণ, তিনি শ্রদ্ধেয়। এবার গেলে কিঞ্চিত হেসে একটু ভুরু উঁচিয়ে বলতে পারবো, সার্কুলেশন যতই হোক আপনার পত্রিকা কয়জন লোকে পড়ে? বাংলানিউজ পড়ে দেশ-বিদেশের ৩ কোটি মানুষ।
বাংলানিউজের এই অর্জন বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়ায় নিঃসন্দেহে অনন্য উদাহরণ। এই অর্জনে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ এবং বাংলাদেশে অনলাইন পত্রিকার জনক আলমগীর ভাইকে অভিনন্দন। শুভেচ্ছা।
২.
বাংলানিউজের এই অর্জনে আমিও গর্বিত। বাংলানিউজে আমার প্রথম লেখাটি প্রকাশে উৎসাহ দেন আবিদ ভাই। কন্ট্রিবিউটিং এডিটর আবিদ রহমান (বর্তমানে আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময়.কম এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক)। বাংলানিউজে আমি প্রথম লিখি “আমাদের সেনাপতিদের তালিপ্রীতি”। এটি ছিল একটি রাজনৈতিক কলাম। এই মিডিয়ায় লেখালেখি নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলেন। অনলাইন মিডিয়ায় লেখার একটা বড় বদনাম হচ্ছে, কেউ কেউ মনে করে এটি বায়বীয় মিডিয়া। অন্যদিকে তারা প্রিন্ট মিডিয়াকে ভারী, ওজনদার ও সমঝদার মনে করে। সেখানে প্রমাণ সাইজের ভুড়ি সমেত ভারী, ওজনদার কলমিস্টরা লেখেন। তাদের লেখায় ইচ্ছে করলে হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়। পেন্নাম করা যায়। অন্যদিকে অনলাইন পত্রিকায় অপেক্ষাকৃত মেদহীন কঞ্চিকায় লেখকরা লেখেন। অনেকে বিনে পয়সায় লেখেন। তাই তার ওজন কম।
কিন্তু বাংলা নিউজ এই বৃত্তটা ভেঙেছেন। আমার মতো কাঁচা হাতের লেখককে যেমন এডিটর ইন চিফ আলমগীর ভাই প্রশ্রয় দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রিন্ট মিডিয়ার নিয়মিত লেখক আবিদ রহমান, মাসুদা ভাট্টি, মাহবুব মিঠু, ফজলুল বারী, মানিক রহমান, মিল্টন হাসনাৎ প্রমুখের লেখাও সংগ্রহ করেছেন, ছেপেছেন। ছিল আরিফ জেবতিক, অমি রহমান পিয়াল সহ জনপ্রিয় ব্লগারদের লেখাও। সর্বশেষ কবি নির্মলেন্দু গুণের লেখাও আমরা বাংলা নিউজে পেয়েছি। এই লেখকদের লেখাগুলো বাংলানিউজকে ওজনদার করেছে। সমৃদ্ধ করেছে।
৩.
এই তিন বছরে আরো একটি বড় সাফল্য হলো, বাংলানিউজের সংবাদকে এখন তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন বাংলানিউজের সংবাদ আলোচনায় ছিল- অর্থমন্ত্রীর মুখে, যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মুখে, রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত’র মুখে। সংসদে মন্ত্রী এমপিরা বাংলানিউজের প্রদত্ত তথ্য তুলে ধরছেন। আলোচনা সমালোচনা করেছেন। গত এক বছরে মন্ত্রী-এমপিদের মুখে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত মিডিয়ার নামও কিন্তু বাংলানিউজ।
একসময় তাদের মুখে প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, ইত্তেফাক, ইনকিলাব ইত্যাদি শব্দ উচ্চারিত হতো। এখন বাংলানিউজ সেই সব নামগুলোর স্থানে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে বড় অর্জন। এটি বাংলানিউজের সাফল্যের এবং খ্যাতির প্রসারের ফল। অভিনন্দন বাংলানিউজ।
নিঃসন্দেহে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম শক্তিশালী সংবাদ প্রতিষ্ঠানটির নাম বাংলানিউজ।
আবারো অভিনন্দন বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফকে। আবারো বলছি, অভিনন্দন বাংলানিউজ।
লেখক পরিচিত: মনোয়ার রুবেল, ব্লগার ও ব্যাংক কর্মকর্তা
[email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১২
সম্পাদনা: আহমেদ রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট