ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের নামকরণ নিয়ে পরিচালকের ভিন্নমত

ড. মো. নুরুল ইসলাম, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১২
সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের নামকরণ নিয়ে পরিচালকের ভিন্নমত

ঢাকা: গত ৩০ জুলাই বাংলানিউজে ‘সমাজকর্ম ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নামকরণে কার লাভ, কার ক্ষতি’ শিরোনামে নিবন্ধের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে লেখাটি পাঠিয়েছেন ড. মো. নুরুল ইসলাম। তার লেখাটি হুবুহু তুলে দেওয়া হলো।



সমাজকল্যাণ ও সমাজকর্ম ধারণাগত দিক থেকে সমার্থবোধক। তুলনামূলক বিচারে সমাজকর্মের চেয়ে সমাজকল্যাণ ধারণাটি ব্যাপক। পৃথিবীতে যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ বা সমাজকর্ম বিষয়ে পাঠদান করা হয়, প্রায় একই ধরনের সিলেবাস তাতে অন্তভুক্ত থাকে। এজন্য সমাজকল্যাণের ডিগ্রিধারীরা যেমন অনায়াসে সমাজকর্ম বিষয়ে উচ্চতর অধ্যায়ন করতে পারে এবং সমাজকর্মের ডিগ্রিধারীরাও পরবর্তী উচ্চতর পর্যায়ের সমাজকল্যাণ বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারে। আমাদের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে অনার্স অথবা মাস্টার্স ডিগ্রি পেয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর অধ্যয়ন করছে। ‘সমাজকর্ম ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নামকরণে কার লাভ, কার ক্ষতি’র লেখক ড. মুহাম্মদ সামাদ নিজেও সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৫ ও ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উইনোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেন।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সমাজকল্যাণ বিষয় এখনো পাঠদান করা হচ্ছে। এছাড়া ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, টোকিও ইউনিভার্সিটি, মোনাস ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া ইউনিভার্সিটিসহ পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ শিক্ষা চালু আছে। পৃথিবীতে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান সমাজকল্যাণ নামে চালু হয়েছিল সেই সব প্রতিষ্ঠান একই নামে এখনও চালু রয়েছে।

সমাজকল্যাণ কখনো দান বা খয়রাতি অর্থে প্রয়োগ হয় না। বরং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে প্রতিরোধ, প্রতিকার, পুনর্বাসন ও উন্নয়নমূলক সেবা। যা আধুনিক পেশাদারিত্ব ও বিজ্ঞানভিত্তিক।

এখানে আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ১৯৫৮ সালে কলেজ অব সোস্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ (সিএসডব্লিউআর) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু হয়। অতঃপর ১৯৭৩ সাল থেকে অদ্যাবধি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অন্যতম ইনস্টিটিউট হিসাবে অনার্স, মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করছে। এই ইনস্টিটিউট ১৯৭৩ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ১১ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডারের অষ্টম স্ট্যাটিউট (বিধি) অনুযায়ী পরিচালিত। এযাবৎ এ-নামকরণ কোনোভাবেই পরিবর্তিত হয় নাই। তাই এ ইনস্টিটিউট কখনো সমাজকর্ম ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে অভিহিত ছিল না, এ মুহূর্তেও নাই। তাই নামকরণ পরিবর্তন সঠিক নয়। ঐতিহাসিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইনস্টিটিউট হিসেবে এটি পরিচিত এবং বর্তমানেও এই নাম বহাল রয়েছে।

সুতরাং, নামকরণ বিষয়ে যে লাভ-ক্ষতি তা কোন ব্যক্তি বিশেষ ও গোষ্ঠীর জন্য নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক ও চলমান একাডেমিক ধারায় পরিচালিত। এখানে লাভ-ক্ষতি কোনোভাবেই বিবেচ্য নয়।

লেখক: পরিচালক, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যোগাযোগ: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১২
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।