শাহবাগ থেকে: বাংলার প্রতিবাদ-সংগ্রামের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। আর এ ইতিহাস বিনির্মাণে কাজ করেছে সেই সময়ের জনতার অফুরান প্রাণশক্তি-প্রতিরোধ সংকল্প।
অত্যাচারী ব্রিটিশ ঔপোনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে বাংলার ফকির-সন্ন্যাস বিদ্রোহ, স্বদেশী আন্দোলন, বর্বর পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে বাষট্টি, ছেষট্টি, আটষট্টি, ঊনসত্তুর, একাত্তরের মহান মুক্তির সংগ্রাম, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পাথেয় হয়েছে জনতার দুর্দমনীয় প্রাণশক্তি।
আর এ প্রাণশক্তি সঞ্চয় করে যারা যুগে যুগে ইতিহাস রচনা করে গেছেন, হয়েছেন ইতিহাস তাদের অধিকাংশই ছিলেন তরুণ।
যুগ পরিক্রমায় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার আলবদর, আল শামসদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগের তরুণ প্রজন্মের চলমান সর্বাত্মক আন্দোলন-গণজাগরণও নিtসন্দেহে ইতিহাসের উজ্জ্বলতম স্থানে ঠাঁই করে নেবে।
ইতিহাসের পাঠ থেকে দেখতে পাই শাহবাগের এ গণজাগরণে তরুণদের বিপুল প্রাণপ্রাচুর্য অতীতের যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামের সমান্তরালে তুচ্ছ গণ্য হওয়ার নয়। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নেতাজি সুভাষ বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজ বা একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনাদের চেয়ে তারা যে কম নন, তা অনেকটা জোর দিয়েই বলা যায়।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শুরু হওয়া এ আন্দোলন শুক্রবার পার করছে চতুর্থ দিন। শুক্রবার সহকর্মী ইলিয়াস সরকার, ইমরান আলী, মোশাররফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে শাহবাগের উত্তাল চত্বরে রাত কাটিয়ে যখন ভোর হচ্ছে তখনও এখানকার তরুণদের রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে যে উচ্চকণ্ঠ-তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে-এ আন্দোলনের প্রাণশক্তি অতীতের যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বৈকি!
ক্রমাগত স্লোগান থামছে না কিছুতেই। ক্লান্তি যেন তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে রাজাকারদের ফাঁসি কার্যকর না করা পর্যন্ত।
এ প্রজন্মের এ তরুণ বিপ্লবীদের লাল সালাম।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৩
এআই/সম্পাদনা: শিমুল সুলতানা, নিউজরুম এডিটর মতামত জানাতে ইমেইল করুন: [email protected]